
সর্বজনীন পেনশন ‘প্রত্যয়’ স্কিম বাতিলের দাবিতে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের টানা নবম দিনের কর্মবিরতিতে অচলই রয়েছে সারা দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম। এদিনও ক্লাস-পরীক্ষা সব থাকতে দেখা যায়।
গতকাল মঙ্গলবারও সকাল থেকে সারা দেশের ৩৫ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করেন শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি), বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের দৈনিক আমাদের বার্তার প্রতিনিধিরা একই ধরনের কর্মসূচির সংবাদ পাঠিয়েছেন।
প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। একই সঙ্গে অভিন্ন নীতিমালা বাতিলেরও দাবি জানান কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।
এদিন, প্রশাসনিক ভবন সংলগ্ন করিডোরে আলাদা আলাদা ব্যানারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন বাকৃবি শিক্ষক, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা। প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষকসহ পাঁচ শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
আন্দোলনরত শিক্ষক নেতারা বলেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলমান থাকবে। এ সময় সকল ক্লাস-পরীক্ষাসহ সকল একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। সরকার আমাদের দাবি মেনে নিলে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু করা হবে।
এদিকে, সরকারের পক্ষ থেকে সমস্যা সমাধানের কোনো উদ্যোগ না নেয়ায় ফুঁসে উঠেছে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
গতকাল মঙ্গলবার ৯ম দিনের মতো সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। কৃষি অর্থনীতি ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের সামনে অনুষ্ঠিত কর্মবিরতি পালন অনুষ্ঠানে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আল মামুনের সঞ্চালনায় এবং সভাপতি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ছফি উল্লাহ ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে শিক্ষক নেতারা বক্তব্য দেন।
তারা বলেন, আমরা করুণা চাচ্ছি না, শিক্ষক নেতারা মনে করেন, ‘প্রত্যয়’ স্কিম প্রত্যাহার আন্দোলন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের আত্মমর্যাদার লড়াই। তাই যেকোনো মূল্যে শিক্ষকেরা দাবি আদায়ে সোচ্চার ভূমিকা পালন করবেন। আমাদের মূল দাবি হলো উচ্চতর স্বতন্ত্র বেতন স্কেল বাস্তবায়ন।
অফিসার পরিষদের সভাপতি মোহাম্মদ ছায়াদ মিয়া বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে ৭ জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে আছেন। ক্যাম্পাসে তারা সভা-সমাবেশ অব্যাহত রেখেছেন। কর্মকর্তাদের দাবি, প্রত্যয় স্কিম বাতিল না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ মার্চ একটি প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, সব স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা ও তাদের অধীন অঙ্গ-প্রতিষ্ঠানগুলোর চাকরিতে যেসব কর্মকর্তা বা কর্মচারী চলতি বছরের ১ জুলাই ও তার পরে নতুন যোগদান করবেন, তাদের সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইনের অন্তর্ভুক্ত করবে সরকার।