ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫ , ১৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ আর্কাইভস ই পেপার

bkash
bkash
udvash
udvash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
bkash
bkash
udvash
udvash

সাত কর্মদিবসের আলটিমেটাম কাল শেষ

সেই ৬৭৬ জাল শিক্ষকের সুলুকসন্ধানে ডিআইএ

শিক্ষা

সাবিহা সুমি, আমাদের বার্তা 

প্রকাশিত: ০৭:০০, ২৮ মে ২০২৫

সর্বশেষ

সেই ৬৭৬ জাল শিক্ষকের সুলুকসন্ধানে ডিআইএ

সরকারিভাবে চিহ্নিত ৬৭৬ জালসনদধারী শিক্ষকের বিস্তারিত তথ্য চেয়েছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর (ডিআইএ)। সাত কর্মদিবসের মধ্যে তাদের যাবতীয় তথ্য ও রেকর্ড ইমেইলে পাঠাতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রধানদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গত ২২ মে অধিদপ্তরের পরিচালক প্রফেসর মো. সাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত চিঠিতে ‘সরাসরি বা বাহক মারফত কোনো তথ্য ও রেকর্ড গ্রহণ করা হবে না’ বলা হয়েছে। যেহেতু সরকারেরে নির্বাহী আদেশ অনুসারে গত ২৪ মে শনিবার ‘অফিস ডে’ ছিল, তাই ডিআইএ এর ওই নির্দেশনা অনুযায়ী আগামীকাল বৃহস্পতিবার সাত কর্মদিবসের আলটিমেটাম শেষ হচ্ছে। 

গতকাল মঙ্গলবার পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের যুগ্ম পরিচালক প্রফেসর খন্দকার মাহফুজুল আলম দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, ইতিপূর্বে যার সনদটি ভুয়া ছিলো বলে সতর্ক করা হয়েছিলো এবং যাদের কাছে বেতন-ভাতা ফেরত চাওয়া হয়েছে -এমন ৬৭৬ জনের তথ্য সংশ্লিষ্ট প্রধান শিক্ষক আমাদের কাছে পাঠাবেন। আমরা তারিখ উল্লেখ করে দিয়েছি। আমরা ইমেইলের মাধ্যমে চেয়েছি। 

তথ্য আহ্বানের কারণ সর্ম্পকে তিনি বলেন, তাদের অনেকেই কম্পিউটার শিক্ষক। ওই সময়ে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলো সরকার অনুমোদিত ছিলো না। আমরা সেই কারণে তাদের চাকরি থেকে আপতত স্থগিত রাখা হতে পারে। এটাকে বৃহত্তর আকারে প্রমার্জন দেয়ার জন্য মন্ত্রণালয় চিন্তা করছে। তালিকা পাওয়ার পরে তাদের প্রমার্জন দেয়া যায় কিনা তা সভা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। অনলাইনে তালিকা আহ্বান করছি। এ তালিকা মন্ত্রণালয়ই আমাদের কাছে চেয়েছে।

জানা গেছে, সারা দেশে জাল শিক্ষকের সংখ্যা কম নয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ‘জাল শিক্ষকের’ বিষয়ে সংবাদ দেশের শিক্ষাবিষয়ক পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল পত্রিকা দৈনিক শিক্ষাডটকমে আসতেই থাকে। তবে সম্প্রতি এই জাল শিক্ষকদের একটা অংশকে প্রমার্জনের উদ্যোগও নেয়া হচ্ছে বলে খবর আসে।

এমন পরিস্থিতিতে সম্প্রতি দৈনিক শিক্ষাডটকম পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, জাল শিক্ষকদের প্রমার্জনের উদ্যোগ সমর্থন করেন না ৬৪ শতাংশ মানুষ। পাশাপাশি, ৩৪ শতাংশ মানুষ এ উদ্যোগকে সমর্থনও জানিয়েছেন। এ ছাড়া বাকি ২ শতাংশ মানুষ এর পক্ষে বা বিপক্ষে কোনো মত দেননি।

গত ২২ এপ্রিল সকাল থেকে শুরু হয়ে ২৪ এপ্রিল বিকেল পর্যন্ত দৈনিক শিক্ষাডটকমের ওয়েবসাইটে এ বিষয়ে এই জরিপ চলানো হয়। প্রশ্নটি ছিলো, জাল শিক্ষকদের প্রমার্জনের উদ্যোগ আপনি সমর্থন করেন কি? জরিপে ‘হ্যাঁ’ এবং ‘না’–এর পাশাপাশি ‘মন্তব্য নেই’ নামে আরেকটি ঘর ছিলো। 

এ জরিপে অংশ নিয়েছেন মোট ৩ হাজার ৬৭৯ জন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী। ‘হ্যাঁ’ ভোট দিয়েছেন ১ হাজার ২৬৪ জন এবং ‘না’ ভোট দিয়েছেন ২ হাজার ৩৩৯ জন মানুষ।

প্রসঙ্গত, স্নাতক (সম্মান ও পাস) ডিগ্রি, এনটিআরসিএর নিবন্ধন সনদ, বিএড সনদ জাল নিয়েই শিক্ষকতা পেশায় ঢুকে পড়ে এমপিওভুক্তও হওয়া শিক্ষকদের নিয়ে প্রথমে সহকর্মীদের মধ্যে কানাঘুষা শুরু হয়। পরে দৈনিক শিক্ষাডটকমসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ পেতে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অনুসন্ধান শুরু করেন। অতপর শিক্ষাবিষয়ক দেশের একমাত্র প্রিন্ট জাতীয় পত্রিকা দৈনিক আমাদের বার্তায় ধারাবাহিকভাবে হাজার হাজার জাল শিক্ষকের তালিকা প্রকাশ করা হয়। তাতে জাল শিক্ষকদের নাম-পরিচয় ও সনদ জালিয়াতির তথ্য প্রকাশ করা হয়। ভুয়া সনদ দিয়ে কে কতো টাকা বেতন-ভাতা বাবদ নিয়েছেন সে তথ্যও তুলে ধরা হয়। এরপর কেউ গা ঢাকা, কেউবা শিক্ষকতা পেশা থেকে ইস্তফা, কেউবা বরখাস্ত। তবে, একটা বড় অংশ হাল ছাড়েননি। তারা জুলাই অভ্যুত্থানে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর বেসরকারি শিক্ষক নেতা ও একশ্রেণির শিক্ষা প্রশাসককে ‘ম্যানেজ’ করে চাকরি রক্ষার উদ্যোগ নিয়েছেন। প্রমার্জন পাওয়ার চেষ্টা করছেন তারা। তাদের একটি বড় অংশ আদালতেও ধরনা দিচ্ছেন, যাদের দাবি, সনদ জালিয়াতির তথ্য প্রকাশ করে তাদেরকে সামাজিকভাবে হেয় করা হয়েছে। তাই জাল শিক্ষকদের সামাজিক ভাবমূর্তি ফেরাতে তাদেরকে বৈধ প্রতিষ্ঠান থেকে সনদ নিয়ে বৈধতা দেয়ার তোড়জোড় শুরু হয়। 

জনপ্রিয়