সব আদালত ও ট্রাইব্যুনালে স্ট্যাম্প, কার্টিজ পেপার, কোর্ট ফি ও ফলিও’র স্বাভাবিক সরবরাহ নিশ্চিতের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরকে চিঠি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার (বিচার) এসকে. এম. তোফায়েল হাসান সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বরাবর এই চিঠি দেন।
প্রসঙ্গত, ‘বিচার বিলম্বিত স্ট্যাম্প ও কোর্ট ফি সংকটে’ শিরোনামে গত ১০ সেপ্টেম্বর দেশের শিক্ষা বিষয়ক একমাত্র জাতীয় দৈনিক পত্রিকা আমাদের বার্তায় একটি বিশেষ সংবাদ প্রকাশিত হয়। যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে এক মাস পর টাকা দিয়েও স্ট্যাম্প-কোর্ট ফি পাওয়া যাবে না বলে শঙ্কা প্রকাশ করা হয় ওই সংবাদে। সংবাদটি দৃষ্টিগোচর হলে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলরা নড়েচড়ে বসেন। ওই সংবাদ প্রকাশের মাত্র এক সপ্তাহের মাথায় স্ট্যাম্প, কার্টিজ পেপার, কোর্ট ফি ও ফলিও’র সংকটের কথা স্বীকার করে সুপ্রিম কোর্ট এই চিঠি পাঠালো।
চিঠিতে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গের মধ্যে বিচার বিভাগ অন্যতম। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগ এবং দেশের ৬৪টি জেলার অধস্তন আদালতে প্রতি কার্যদিবসে বিচারপ্রার্থী জনগণের পক্ষে মামলা দায়েরসহ অন্যান্য দরখাস্ত দাখিলের সময় জুডিসিয়াল ও নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পি এবং কোর্ট ফি সংযুক্ত করতে হয়। আদালতে দাখিলকৃত স্ট্যাম্প ও কোর্ট ফি'র মাধ্যমে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব পেয়ে থাকে। জুডিসিয়াল ও নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্প জালিয়াতির কারণে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হতে বঞ্চিত হচ্ছে। নকল স্ট্যাম্প ও কোর্ট ফি শনাক্তকরণের নিমিত্তে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, বাংলাদেশ ডাক বিভাগ, সিকিউরিটি প্রিন্টিং কর্পোরেশন বাংলাদেশ লিমিটেড (এসপিসিবিএল), ডিপার্টমেন্ট অব কারেন্সি ম্যানেজমেন্ট ও পেমেন্ট সিস্টেম ডিপার্টমেন্ট, বাংলাদেশ ব্যাংক এর সমন্বয়ে কিছু স্বল্প মেয়াদি ও কিছু দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিল। তারই ধারাবাহিকতায় I CD UV LED flash light (UV-365nm) ডিভাইস ব্যবহার করে নকল স্ট্যাম্প ও কোর্ট ফি শনাক্তকরণের নিমিত্ত বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট অধস্তন আদালতের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা এবং জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি/সম্পাদকগণ-কে প্রশিক্ষণ প্রদান করে এবং অধস্তন আদালতে I CD UV LED flash light (UV-365nm) ডিভাইস বিতরণ করে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের গোচরীভূত হয়েছে যে, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট এবং দেশের ৬৪টি জেলায় স্ট্যাম্প, কার্টিজ পেপার, কোর্ট ফি ও ফলিও’র সংকট বিরাজ করছে। বিচারপ্রার্থীদের বাধ্য হয়ে কয়েক গুণ বেশি দামে ভেন্ডারদের কাছ থেকে এসব কিনতে হচ্ছে। ফলে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। ভেন্ডারদের অভিযোগ, ট্রেজারিতে স্ট্যাম্প, কার্টিজ পেপার, কোর্ট ফি ও ফলিও’র চরম সংকট থাকায় ট্রেজারি শাখা থেকে চাহিদামতো এগুলোর সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে না। চিঠিতে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টসহ অধস্তন সকল আদালত ও ট্রাইব্যুনালে স্ট্যাম্প, কার্টিজ পেপার, কোর্ট ফি ও ফলিও’র স্বাভাবিক সরবরাহ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে গভর্নরকে অনুরোধ করা হয়।