ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৮ মে ২০২৫ , ২৪ বৈশাখ ১৪৩২ আর্কাইভস ই পেপার

bkash
bkash
udvash
udvash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
bkash
bkash
udvash
udvash

যৌতুকের অভিশাপ থেকে মুক্ত হোক সমাজ

মতামত

শামসুদ্দীন সাদী

প্রকাশিত: ১৭:৪৩, ৮ মে ২০২৫

সর্বশেষ

যৌতুকের অভিশাপ থেকে মুক্ত হোক সমাজ

প্রতীকী ছবি

যৌতুক একটি অভিশপ্ত সামাজিক ব্যাধি; যা পৌত্তলিক সমাজের প্রথা। এটি এমন একটি বর্বর প্রথা ও জুলুম, যা জাহেলি যুগেও ছিল না। উপমহাদেশের হিন্দু সমাজ থেকে তা মুসলিমদের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে। এটি ইসলামি শরিয়তে নিষিদ্ধ। কোরআন মাজিদে আল্লাহ তায়ালা বলেন: এবং তোমরা পরস্পরে একে অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে ভোগ করো না। (সুরা বাকারা: ১৮৮)

যৌতুক অন্যায়ভাবে অন্যের সম্পদ ভক্ষণের এক ঘৃণিত রূপ ও বহু জুলুমের উৎস। মুমিন কোনো অবস্থায়ই কাফের-মুশরিকদের এ রীতিনীতির অনুসরণ করতে পারে না।

সমাজে বিভিন্নরূপে যৌতুকের লেনদেন হয়ে থাকে। কখনো সরাসরি আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে, কখনো আসবাব-পত্র, বাহন, জমি-জমা, ফ্ল্যাট, বিদেশ পাঠানোর খরচ, ব্যবসার ব্যবস্থা করে দেওয়া ইত্যাদি। কিন্তু কিছু মানুষ আর্থিক লেনদেনকেই কেবল যৌতুক মনে করেন, আর্থিক লেনদেন ছাড়া অন্যান্য বিষয়কে যৌতুক মনে করেন না; বরং সেগুলোকে নিজেদের এক প্রকার হক ও প্রাপ্য মনে করেন।

তাদের এ ধারণা ঠিক নয়। বিয়ের সময় বা বিয়ের আগে-পরে যে কোনো সময় কনে বা কনেপক্ষের কাছ থেকে বর বা বরপক্ষের লোকেরা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে চাপ দিয়ে যা কিছু উসুল করে কিংবা সামাজিক প্রথার কারণে বাধ্য হয়ে তাদেরকে দেওয়া হয়, তদ্রূপ কনে বা কনেপক্ষের লোকেরা মোহর ও ভরণ-পোষণের অধিক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে চাপ দিয়ে যা কিছু উসুল করে বা সামাজিক প্রথার কারণে বাধ্য হয়ে তাদেরকে দেওয়া হয় সবই যৌতুকের অন্তর্ভুক্ত এবং তা অন্যায়ভাবে ও স্বতঃস্ফূর্ত সম্মতি ছাড়া অন্যের সম্পদ ভক্ষণের নামান্তর।

বিদায় হজের ঐতিহাসিক ভাষণে নবীজি (সা.) বলেছেন : সাবধান! কারো জন্য তার ভাইয়ের সামান্য সম্পদও বৈধ নয়, যদি তার স্বতঃস্ফূর্ত সম্মতি না থাকে। (মুসনাদে আহমাদ: ১৫৪৮৮)

জেনে রাখা দরকার, পিতা যদি বাধ্য হয়ে নিজের কন্যাকে কোনো কিছু দেয় তাহলে তা গ্রহণ করা তার জন্যও বৈধ নয়। তাহলে স্বামী বা শ্বশুরালয় থেকে যদি কন্যার উপহার দাবি করা হয় কিংবা কোনো তালিকা দেওয়া হয় তাহলে তা কীভাবে বৈধ হবে?

তবে হ্যাঁ, কন্যার বিবাহের সময় বা স্বামীর বাড়িতে আগমনের সময় পিতা নিজ সাধ্য অনুসারে তাকে যে গহনাগাটি বা সামানপত্র শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য উপহার দেয়, সেটি বৈধ এবং প্রচলিত যৌতুকের সাথে এর বিন্দুমাত্র সম্পর্ক নেই। তবে শর্ত হল, তা হতে হবে কোনো প্রকার সামাজিক চাপ ছাড়া, স্বতঃস্ফূর্ত ও সন্তুষ্টচিত্তে।

সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হলো, অধিকাংশ ক্ষেত্রে এ হারাম ও বর্বর অন্যায় কাজটি হয় পরিবারের মুরব্বিদের মাধ্যমে। এমনকি মা-বাবা, যারা কিনা সন্তানের সবচেয়ে বড় কল্যাণকামী, তাদেরকেও অনেকসময় দেখা যায় সন্তান না চাইলেও এ হারাম কাজে বাধ্য করে।

আল্লাহ তায়ালা মুসলিম সমাজকে মুশরিকদের এ বর্বর প্রথা থেকে রক্ষা করুন এবং সকলকে দীনের সঠিক বুঝ নসিব করুন।

লেখক ও অনুবাদক

 

জনপ্রিয়