
বিশিষ্ট আইনজীবী, সমাজকর্মী ও ঐতিহাসিক অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়র আজ মৃত্যুবার্ষিকী। তিনি ১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দের ১ মার্চ নদীয়া জেলার নওয়াপাড়া থানার সিমুলিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। অক্ষয়কুমার ১৮৭৮ খ্রিষ্টাব্দে বোয়ালিয়া ইংলিশ স্কুল (বর্তমানে রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল) থেকে এন্ট্রান্স, ১৮৮০ খ্রিষ্টাব্দে রাজশাহী কলেজ থেকে এফএ ১৮৮৩ খ্রিষ্টাব্দে প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বিএ এবং ১৮৮৫ খ্রিষ্টাব্দে রাজশাহী কলেজ থেকে বিএল পাস করেন এবং একই বছর তিনি রাজশাহীতে আইন ব্যবসা শুরু করেন।
তিনি ঐতিহাসিক চিত্র শিরোনামে সিরাজউদ্দৌলা, মীর কাসিম, রানী ভবানী, সীতারাম, ফিরিঙ্গি বণিক প্রমুখ ব্যক্তিকে নিয়ে ইতিহাস বিষয়ক প্রথম বাংলা সাময়িক পত্রিকা প্রকাশ করেন। যুগপৎ তিনি বাংলার রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাস, ঐতিহাসিক গুরুত্বসম্পন্ন স্থান, শিল্পকলা ও পটশিল্প সম্পর্কে তথ্যমূলক নিবন্ধও প্রকাশ করেন। ১৯১২ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত গৌড়লেখমালায় তিনি কয়েকটি পাল তাম্রশাসন ও শিলালিপি বাংলা অনুবাদসহ সম্পাদনা করেন। এতে করে বাংলা ভাষায় ঐতিহাসিক গবেষণার নতুন ক্ষেত্র উন্মোচিত হয়।
রাজশাহী এলাকায় তাদের প্রথম সফল সফরকালে উদ্ধারকৃত প্রত্ননিদর্শনাদি সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের লক্ষ্যে তারা ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দের এপ্রিলে রাজশাহী জাদুঘর (বর্তমান বরেন্দ্র রিসার্চ মিউজিয়াম) প্রতিষ্ঠা করেন। বরেন্দ্র রিসার্চ সোসাইটির তদারকিতেই জাদুঘরটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
রাজশাহী পৌরসভার কমিশনার থাকাকালে অক্ষয়কুমার রাজশাহীর নাগরিক সুবিধাসংশ্লিষ্ট অবকাঠামো ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ত্বরান্বিত করেন। ডায়মন্ড জুবিলি ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্কুলের সূচনালগ্নে তিনি এ প্রতিষ্ঠানকে যথেষ্ট পৃষ্ঠপোষকতা দেন। এমনকি স্কুলের অবৈতনিক প্রশিক্ষক হিসেবে তিনি ছাত্রছাত্রীদের রেশম চাষ পদ্ধতি শিক্ষা দিতেন। বেশ কিছুসংখ্যক সংস্কৃত নাটকের সঙ্গে তিনি সম্পৃক্ত ছিলেন। একজন ভাল ক্রিকেট খেলোয়াড় ও চিত্রকর অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় ১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দের আজকের এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন।