ঢাকা রোববার, ০৪ মে ২০২৫ , ২০ বৈশাখ ১৪৩২ আর্কাইভস ই পেপার

bkash
bkash
udvash
udvash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
bkash
bkash
udvash
udvash

প্রখ্যাত সাহিত্যিক আবুল ফজলের আজ মৃত্যুবার্ষিকী

বিবিধ

আমাদের বার্তা ডেস্ক

প্রকাশিত: ১২:০০, ৪ মে ২০২৫

সর্বশেষ

প্রখ্যাত সাহিত্যিক আবুল ফজলের আজ মৃত্যুবার্ষিকী

বাংলাদেশের প্রখ্যাত সাহিত্যিক আবুল ফজলের আজ মৃত্যুবার্ষিকী । তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং রাষ্ট্রপতির শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি মূলত একজন চিন্তাশীল ও সমাজমনস্ক প্রবন্ধকার। তার প্রবন্ধে সমাজ, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও রাষ্ট্র সম্পর্কে গভীর ও স্বচ্ছ দৃষ্টিসম্পন্ন মনোভাবের পরিচয় পাওয়া যায়।

আবুল ফজল ১৯০৩ খ্রিষ্টাব্দের ১ জুলাই চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার কেঁওচিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মৌলভি ফজলুর রহমান এবং মা গুলশান আরার একমাত্র পুত্রসন্তান। তার প্রাথমিক পড়াশোনা শুরু হয় গ্রামের প্রাইমারি স্কুলে।

এখানে অল্প কিছুদিন পড়ার পর বাবার সঙ্গে চট্টগ্রাম শহরে চলে আসেন। পরবর্তীতে নন্দন কাননে এক হাইস্কুল সংলগ্ন প্রাইমারি স্কুলে ভর্তি হন। মাদরাসা সেশন শুরু হতে দেরি ছিলো বলে সাময়িকভাবে তাকে ঐ স্কুলে ভর্তি করা হয়।

পরে ১৯১৩/১৪ খ্রিষ্টাব্দে চট্টগ্রাম সরকারি মাদরাসায় দ্বিতীয় শ্রেণিতে ভর্তি হন। ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দে ম্যাট্রিক পাস করেন। ১৯২৫ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজ (বর্তমান কবি নজরুল সরকারি কলেজ) থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯২৮ খ্রিষ্টাব্দে বিএ পাস করেন। এছাড়া ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ পাস করেন।

১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দে বিটি পড়ার জন্য ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজে ভর্তি হন। বিটি পাস করার পর ১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দে চট্টগ্রাম ফিরে আসেন। চট্টগ্রাম আসার পর সেখানকার কলেজিয়েট স্কুলে দ্বিতীয় মৌলভি হিসেবে কিছুদিন চাকরি করেন।

এরপর তিনি সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজে সহকারী শিক্ষক হিসেবে দুই মাস চাকরি করেন। এরপর চট্টগ্রাম কাজেম আলী বেসরকারি হাইস্কুলে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে অস্থায়ীভাবে যোগ দেন। ১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি খুলনা জেলা স্কুলে দ্বিতীয় পণ্ডিতের পদে স্থায়ীভাবে যোগ দেন।

১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দে খুলনা ছেড়ে এসে তিনি চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলে সহকারী ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। পরবর্তীতে ১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দে কৃষ্ণনগর কলেজে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দে যোগ দেন চট্টগ্রাম কলেজ।

এই কলেজের কলেজ গভর্নিং বডির নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হন এবং জয়ী হন। ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। এছাড়াও তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে এবং বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

একজন সমাজসচেতন বুদ্ধিজীবী হিসেবে আবুল ফজল ছিলেন নিঃশঙ্কচিত্ত। জাতির বিভিন্ন সঙ্কটকালে তার নির্ভীক ভূমিকা ছিলো প্রশংসনীয়। বাংলা ভাষা ও সাহিত্য, বাঙালি সংস্কৃতি এবং বাঙালি জাতির প্রতি ছিলো তার গভীর অনুরাগ ও মমত্ববোধ।

তাই ১৯৬৭ খ্রিষ্টাব্দে পাকিস্তান সরকার যখন রবীন্দ্রনাথকে পাকিস্তানের আদর্শবিরোধী হিসেবে আখ্যায়িত করে রেডিও-টেলিভিশন থেকে রবীন্দ্রসঙ্গীত প্রচার বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়, তখন তিনি এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানান।

আবুল ফজল উপন্যাস, ছোটগল্প, নাটক, আত্মকথা, ধর্ম, ভ্রমণকাহিনী ইত্যাদি বিষয়ে বহু গ্রন্থ রচনা করেন। সে সবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো: চৌচির, প্রদীপ ও পতঙ্গ, মাটির পৃথিবী , বিচিত্র কথা, রাঙা প্রভাত, রেখাচিত্র, দুর্দিনের দিনলিপি প্রভৃতি।

বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতিতে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার, প্রেসিডেন্টের রাষ্ট্রীয় সাহিত্য পুরস্কার, আদমজী সাহিত্য পুরস্কার, নাসিরুদ্দীন স্বর্ণপদক, মুক্তধারা সাহিত্য পুরস্কার এবং আবদুল হাই সাহিত্য পদকে ভূষিত হন। ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাকে ডক্টরেট উপাধি দিয়ে সম্মানিত করে।

সাহিত্য চর্চায় অসাধারণ অবদানের জন্য ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের ‘সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার’ হিসেবে পরিচিত ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ দেয়া হয় তাকে। আবুল ফজল ১৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে চট্টগ্রামে মৃত্যুবরণ করেন।

 

জনপ্রিয়