গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক এক প্রতিবেদনে বলেছে, দেশের আর্থিক খাতের অগ্রগতির জন্য উচ্চ খেলাপি ঋণ একটি ‘বড় হুমকি’।
এমন এক সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক এই মন্তব্য করলো যখন ঋণ প্রদানে অনিয়ম, ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার শিথিলতার কারণে ব্যাংকিং খাত বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণের ভারে জর্জরিত।
২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর শেষে বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিলো ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৯ শতাংশ। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই উচ্চ খেলাপি ঋণ ব্যাংকগুলোর স্থিতিশীলতা ও মুনাফায় প্রভাব ফেলছে, জনগণের আস্থা কমিয়েছে। এছাড়া তহবিল প্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করছে, যা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিলো ১ লাখ ২০ হাজার ৬৫০ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ৮ দশমিক ২৩ শতাংশ।
২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন প্রান্তিকে ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ আরো বেড়েছিলো। চতুর্থ প্রান্তিকে এর পরিমাণ কমলেও বছরওয়ারি হিসেবে উচ্চ ছিলো।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রা ও বিনিময় হারের ত্রৈমাসিক পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, খেলাপি ঋণ বেশি হলে ব্যাংকগুলোকে এই ঋণের বিপরীতে প্রভিশন বাড়াতে হয়। ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতির জন্য মূলত খেলাপি ঋণ দায়ী।
এতে আরো বলা হয়, খেলাপি ঋণ কমানো ছাড়া ব্যাংকিং ব্যবস্থায় মূলধন পর্যাপ্ততার কোনো উন্নতি হবে না।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো গত ১০ বছর ধরে ন্যূনতম মূলধন পর্যাপ্ততা অনুপাত ধরে রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে। অন্যদিকে বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো মূলধনের আন্ডার ক্যাপিটালাইজড অবস্থায় আছে। দ্রুত এসব সমস্যার সমাধান করা না গেলে সার্বিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।