
গবেষণায় রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং না করার পরামর্শ দিয়েছেন সর্বাধিক রেফারেন্সপ্রাপ্ত স্কলারদের শীর্ষ তালিকায় থাকা ফ্রান্সের মপেলিয়ার বিজনেস স্কুলের অধ্যাপক ড. রামেশ্বর দুবে। একইসঙ্গে ব্যবসায় গবেষণায় তত্ত্ব বিকাশের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে তিনি ডিজিটাল যুগে আধুনিক ব্যবসায়িক চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে গবেষকদের উৎসাহিত করেছেন।
গতকাল সোমবার দৈনিক আমাদের বার্তায় পাঠানো নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির (এনএসইউ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়, গত রোববার বিশ্ববিদ্যালয়টির মার্কেটিং অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত বিশেষ ওয়েবিনারে প্রধান বক্তা হিসেবে অংশ নিয়ে অধ্যাপক দুবে এ পরামর্শ দেন। ওয়েবিনারটির শিরোনাম ছিলো 'আর্ট অব ক্রিয়েটিং কনসেপচুয়াল মডেলস ইন বিজনেস রিসার্চ'।
এনএসইউ জানিয়েছে, ড. রামেশ্বর সর্বাধিক রেফারেন্সপ্রাপ্ত স্কলারদের তালিকায় শীর্ষ ১ শতাংশের মধ্যে অন্যতম। বিশ্বের শীর্ষ পর্যায়ের একাডেমিক জার্নালে তিনি সম্পাদকীয় ভূমিকা পালন করে থাকেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে অংশ নেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির স্কুল অব বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিক্সের ডিন অধ্যাপক ড. হেলাল আহমেদ। সেশনে মোট ২০ জন ফ্যাকাল্টি মেম্বার অংশ নেন। একই বিভাগের অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ পরিচয় করিয়ে দেন ড. রামেশ্বরকে। তিনি বিজনেস ম্যানেজমেন্ট এবং অপারেশনে ড. রামেশ্বরের উল্লেখযোগ্য অবদানের কথা উল্লেখ করেন।
সমাপনী বক্তব্যে ড. হেলাল আহমেদ এ গুরুত্বপূর্ণ সেশন আয়োজনের জন্য বিভাগের প্রশংসা করেন। তিনি ড. রামেশ্বরের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং গবেষণার গুণগত মান বাড়ানোর জন্য আরো সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টার প্রত্যাশা করেন।
প্রসঙ্গত, ইঞ্জিনিয়ারিং বলতে কোনো কিছু সৃষ্টি করাকে বুঝায়, আর রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং বলতে সেই সৃষ্ট জিনিসটাকে ভেঙ্গে সেটি তৈরির প্রক্রিয়াকে বিশ্লেষণ করে পুনরায় তৈরি করাকে বুঝায়। এটিকে সাধারণ ভাষায় ব্যাক ইঞ্জিনিয়ারিংও বলা হয়। যেমন একটি গাড়ি তৈরি করতে একজন অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারকে নকশা ডিজাইন করে একটির পর একটি অংশ জোড়া লাগিয়ে সম্পূর্ণ গাড়িটি তৈরি করতে হয়। এখন সেই গাড়িটি কীভাবে তৈরি করা হয়েছিল তা বুঝার জন্য যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গাড়িটি তৈরি করা হয়েছিল তা আবার একটির পর একটি অংশ খুলে ফেলার নামই রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং। রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং পদ্ধতিটি সাধারণত মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং, কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এবং সিস্টেম জীববিদ্যার জন্য প্রযোজ্য হয়। হ্যাকার বা ক্র্যাকাররা বিভিন্ন পেইড প্রোগ্রামকে ক্র্যাক হিসাবে ব্যবহার করার জন্য এই রির্ভাস ইঞ্জিনিয়ারিংকে ব্যবহার করে থাকে। অন্যদিকে সাইবার নিরাপত্তার জন্য সাইবার বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন ক্ষতিকর ফাইলের আচার-আচরণ ও সিগনেচার ডিটেকশনের জন্য রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং-এর ব্যবহার করেন। কোনো জিনিস থেকে জ্ঞান আহরণ বা গবেষণার জন্য রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। তবে ব্যবসা ও সামাজিক বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় গবেষণার ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি সৃজনশীলতা ও নতুন কিছু প্রাপ্তির অন্তরায় হতে পারে।