
বর্তমান যুগে সোশ্যাল মিডিয়া জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। ফেসবুক, এক্স, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব ইত্যাদি প্ল্যাটফর্মে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ তথ্য আদান-প্রদান করছে। প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার না হলে তা উপকারের বদলে অনিষ্ট ডেকে আনতে পারে। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইসলাম শিষ্টাচার ও নৈতিকতার নির্দেশনা দিয়েছে, যা একজন মুসলিমের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা জরুরি।
তথ্য শেয়ারের আগে যাচাই করা
সামাজিক মাধ্যমে কোনো তথ্য শেয়ার করার আগে তার সত্যতা যাচাই করা জরুরি। কোরআন মাজিদে সংবাদ প্রচারের আগে তা যাচাইয়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন: হে মুমিনগণ! যদি কোনো ফাসিক ব্যক্তি তোমাদের কাছে কোনো সংবাদ নিয়ে আসে, তবে তোমরা তা যাচাই করে নাও। (সুরা হুজুরাত: ৬) ভুল তথ্য শেয়ারের ফলে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়। অনেক সময় বড় বিপদও ঘটে যায়। মানুষের প্রাণহানি ঘটে। দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি হয়।
অশ্লীলতা বর্জন করা
অশ্লীলতা সবসময়ই নিন্দনীয় ও পরিত্যাজ্য। সামাজিক মাধ্যম একটি উন্মুক্ত ফ্ল্যাটফর্ম। এখানে ভালো বিষয় যেমন থাকে, নানা অশ্লীলতাপূর্ণ বিষয়ও স্ক্রীনে ভেসে উঠে। তাই নিজে অশ্লীলতা তৈরি করব না, অন্যদের অশ্লীলতাপূর্ণ কন্টেন্ট শেয়ার দিব না। লাইক কমেন্ট করব না। লাইক কমেন্ট ও শেয়ার দেওয়ার মাধ্যমে অশ্লীলতার প্রচার হয়। কোরআন মাজিদে আল্লাহ তায়ালা অশ্লীলতা প্রচারকারীর জন্য ভয়াবহ শাস্তির ঘোষণা দিয়েছেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন: নিশ্চয়ই যারা মুমিনদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রসার কামনা করে, তাদের জন্য দুনিয়া ও আখেরাতে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। (সুরা নূর: ১৯) মূলত যা কিছু বাস্তব জগতে প্রচার-প্রসার করা নিষেধ বা হারাম, তা সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করাও হারাম।
কল্যাণমূলক কাজে ব্যবহার করা
সোশ্যাল মিডিয়াকে মানুষের কল্যাণে ব্যবহার করব। মানুষের জন্য উপকারী বিষয় প্রচার করব। ভালো ও উপকারী কন্টেন্ট শেয়ার করে সাওয়াবও লাভ করতে পারি। এমনকি এগুলো সদকায়ে জারিয়াও হতে পারে।
সোশ্যাল মিডিয়া একটি শক্তিশালী মাধ্যম। এর সঠিক ব্যবহার জ্ঞানের প্রচার ও সমাজ উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে। এর অপব্যবহার দুনিয়া ও আখেরাতে ক্ষতির কারণ হতে পারে। আসুন, আমরা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে সতর্ক হই।
লেখক: শিক্ষক, শাহ মাহমুদিয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসা, বাঁশখালি, চট্টগ্রাম