
পশ্চিমারা সামরিক সাহায্য দিয়ে যাচ্ছে ভারতকে। আর চীন দিচ্ছে পাকিস্তানকে। এই সামরিক সাহায্য দিন দিন বাড়ছে। এসব লক্ষণ দেখে বোঝা যাচ্ছে সংঘাত দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমান সংকটের আগে শেষবার যখন ভারত ও পাকিস্তান সামরিক সংঘাতে লিপ্ত হয়েছিল, সেটা ছিল ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে। ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পুলওয়ামাতে একটি আত্মঘাতী হামলায় প্রায় ৪০ জন ভারতীয় সেনা সদস্য নিহত হওয়ার পর ভারত পাকিস্তানের ভূখণ্ডে আঘাত হানার প্রস্তুতি নিচ্ছিল – যথারীতি পরিস্থিতির মোকাবিলায় তৈরি ছিল পাকিস্তানও।
সে সময়কার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও তার স্মৃতিকথা 'নেভার গিভ এন ইঞ্চ'-এ লিখেছেন, আচমকা সীমান্তের দুপারেই পরমাণু অস্ত্রসম্ভারের 'উদ্বেগজনক নড়াচড়া' দেখতে পেয়ে গভীর রাতে মার্কিন কর্মকর্তারা তাকে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন। এবং তারপর পম্পেওকে অনেকটা সময় টেলিফোনে পড়ে থাকতে হয় দু'পক্ষকে আলাদা করে এটা বোঝাতে যে অন্য পক্ষ কিন্তু পারমাণবিক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে না!
সেবারের মতো বালাকোটে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা আর সীমান্তে গোলাগুলির ভেতর দিয়েই উত্তেজনা থিতিয়ে এসেছিল। কিন্তু সেই ঘটনার ছ'বছর বাদে দুই পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশী আবার একটা সামরিক সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে – যেটার পরিণতি কী হবে তা এখনও স্পষ্ট নয়।
চলমান সংকটে 'ট্রিগার' হিসেবে কাজ করেছে ভারত শাসিত কাশ্মীরের পহেলগামে পর্যটকদের ওপরে চালানো হত্যাকাণ্ড, যার জন্য ভারত সরাসরি 'পাকিস্তানে প্রশিক্ষণ নেওয়া সন্ত্রাসবাদীদের দায়ী করছে। পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং বলেছে ভারত এই বক্তব্যের স্বপক্ষে কোনও প্রমাণই দিতে পারেনি। কিন্তু তারপরও সংঘাত শুরু হয়ে গেছে তীব্রভাবে।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ছ'বছর আগের তুলনায় এখন এই সংঘাতের চরিত্র অনেকটাই আলাদা – কারণ গত কয়েক বছরে দক্ষিণ এশিয়ার এই প্রান্তে অস্ত্র সরবরাহের ছবিটাই বদলে গেছে, তৈরি হয়েছে নতুন নতুন সমীকরণ।
যেমন, পাকিস্তান এখন তাদের সামরিক অস্ত্রসম্ভারের ৮১ শতাংশই পায় চীনের কাছ থেকে – আর যে আমেরিকা একটা সময় তাদের প্রধান সাপ্লায়ার ছিল তাদের কাছ থেকে এখন আর প্রায় কিছুই কেনাকাটা করা হয় না!
অন্য দিকে ভারত মাত্র দু'দশক আগেও তাদের তিন-চতুর্থাংশ অস্ত্রশস্ত্র কিনত রাশিয়ার কাছ থেকে। সেই পরিমাণ এখন আগের তুলনায় অর্ধেকেরও কম, আর ভারতের নির্ভরতা বেড়েছে ফ্রান্স ও আমেরিকার ওপর।
[inside-ad-2]পাশাপাশি গ্লোবাল জিওপলিটিক্স বা বৈশ্বিক ভূরাজনীতিতেও বিভিন্ন দেশের ভূমিকা এবং নিজস্ব হিসেবনিকেশে পরিবর্তন এসেছে, তারা যে চোখে ভারত বা পাকিস্তানকে দেখত সেটাও আর পুরোপুরি আগের মতো নেই।
এই পটভূমিতেই এই প্রতিবেদনে সংক্ষেপে দেখার চেষ্টা করা হয়েছে – আমেরিকা, চীন ও রাশিয়ার মতো তিনটি বৃহৎ পরাশক্তি এই সংঘাতকে কীভাবে দেখছে এবং তাদের সেই অবস্থানের পেছনে কী যুক্তি থাকতে পারে।
এদিকে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভান্স পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যেকার চলমান সংঘাতে তার দেশ মোটেই হস্তক্ষেপ করতে ইচ্ছুক নয়। তার কথায়, দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে যুদ্ধ হলেও সেটা নিয়ে আমাদের মাথা ঘামানোর কিছু নেই!
মার্কিন সংবাদমাধ্যমে ফক্স নিউজের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই মন্তব্য করেন।
ভাইস প্রেসিডেন্ট ভান্স বলেন, আমেরিকা অবশ্যই চাইবে পরিস্থিতি 'ডিএসক্যালেট' করুক – অর্থাৎ উত্তেজনা প্রশমিত হোক; কিন্তু তারা কোনও পক্ষকেই 'অস্ত্র সংবরণ করার জন্য' জোর করতে পারে না।
তিনি বলেন, আমরা দু'পক্ষকে উত্তেজনা প্রশমিত করার কথা বলতে পারি, কিন্তু ওই যুদ্ধের মাঝে গিয়ে ঢোকার কোনও ইচ্ছে আমাদের নেই। সেটা আমাদের মাথা ঘামানোর বিষয়ও নয়। আমেরিকার এই যুদ্ধ থামানোর ক্ষমতা আছে কি না, তার সঙ্গেও এর কোনও সম্পর্ক নেই!
তিনি আরও জানান, অস্ত্র নামিয়ে রাখার জন্য আমেরিকা কোনও পক্ষকেই জোর করতে পারে না – কিন্তু একই লক্ষ্য যদি কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে অর্জন করা যায় তারা সে চেষ্টা চালিয়ে যাবেন।
জে ডি ভান্স যখন এ মন্তব্য করছেন, ঠিক তখনই মার্কিন সেক্রেটারি অব স্টেট (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) মার্কো রুবিও ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশের নেতাদের সঙ্গেই টেলিফোনে কথা বলে অবিলম্বে পরিস্থিতি 'ডিএসক্যালেট' করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তবে আমেরিকা যে সরাসরি এই যুদ্ধে কোনওভাবেই জড়াতে চায় না, সেটা তিনিও বুঝিয়ে দিয়েছেন।
ব্রিটেনের 'দ্য গার্ডিয়ান' পত্রিকার মতে, আমেরিকার শীর্ষ নীতিনির্ধারকদের এই ধরনের অবস্থান ডোনাল্ড ট্রাম্পের 'আমেরিকা ফার্স্ট' পররাষ্ট্র নীতিরই প্রতিফলন – যেখানে বিদেশের মাটিতে কোনও সংঘাতে আমেরিকা নিজেকে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় দেখতে চায় না।
তারা আরও মনে করিয়ে দিচ্ছে, ট্রাম্প ও ভান্স দু'জনেই কিন্তু হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাশিয়া ও ইউক্রেন যদি নিজেদের মধ্যে সরাসরি কথা বলতে না পারে তাহলে সেখানেও যুদ্ধবিরতি করানোর চেষ্টায় আমেরিকা কিন্তু রণে ভঙ্গ দেবে!
দ্য গার্ডিয়ান আরও জানাচ্ছে, নতুন ট্রাম্প প্রশাসনের ফরেন পলিসি নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে জে ডি ভান্সের একটা বড় ভূমিকা ছিল।
তাদের মতে, ভারত-পাকিস্তান সংঘাতেও সেই নীতিরই ছাপ দেখা যাচ্ছে – যেখানে আমেরিকা কিছুতেই যুদ্ধক্ষেত্রের ভেতরে ঢুকবে না, তবে দূর থেকে কথাবার্তা বলে কিছু করা গেলে শুধু সেটুকুই চেষ্টা করবে।
প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল পহেলগামে যখন পর্যটকদের ওপর হামলা চালানো হয় ভাইস প্রেসিডেন্ট ভান্স তখন ভারত সফরেই ছিলেন।
তখনও তিনি বলেছিলেন, পাকিস্তানের ভেতরে থাকা 'সন্ত্রাসবাদী'দের বিরুদ্ধে ভারত প্রত্যাঘাত করতেই পারে – কিন্তু আমেরিকা শুধু চাইবে সেটা যেন 'বৃহত্তর কোনও আঞ্চলিক যুদ্ধে'র চেহারা না নেয়।
চীন ও পাকিস্তান নিজেদের 'অল ওয়েদার ফ্রেন্ড' বলে বর্ণনা করে থাকে, অর্থাৎ পাকিস্তানের ভাল বা খারাপ সব সময়ে চীনকে তারা পাশে পাবে দু'পক্ষের মধ্যে এই আস্থা ও বন্ধুত্বের সম্পর্কটা আছে। সামরিক ক্ষেত্রেও পাকিস্তানের সবচেয়ে বেশি নির্ভরশীলতা (৮১%) চীনের ওপরেই।
তা ছাড়া চীনের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের একটি প্রধান স্তম্ভ 'সিপেক'-ও (চায়না পাকিস্তান ইকোনমিক করিডর) পাকিস্তানের বুক চিরেই গিয়েছে।
তবে বুধবার ভোররাতে ভারতের চালানো 'অপারেশন সিন্দুরে'র পর চীন যে বিবৃতি দিয়েছে পর্যবেক্ষকরা সেটাকে বেশ ভারসাম্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন।
বুধবার তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জারি করা ওই বিবৃতিতে বেইজিং বলেছে, এদিন সকালে ভারতের নেওয়া সামরিক পদক্ষেপে চীন হতাশ। বর্তমান ঘটনাপ্রবাহে আমরা উদ্বিগ্নও বটে।
চীন সব ধরনের সন্ত্রাসবাদের বিরোধী। ফলে শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে অগ্রাধিকার দিতে আমরা দুই দেশকেই আহ্বান জানাই। আমরা চাই উভয়েই যেন শান্ত ও সংযত থাকে এবং এমন কোনও পদক্ষেপ না নেয় যাতে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে।
ভারত ও পাকিস্তান যে চিরকাল পরস্পরের প্রতিবেশী থাকবে – এবং চীনও তাদের উভয়েরই প্রতিবেশী – বিবৃতিতে সেটাও মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে।
চীনের এই বিবৃতিতে চলমান সংঘাত থেকে আপাতদৃষ্টিতে কিছুটা দূরত্ব বজায় রাখার আভাস থাকলেও সংবাদমাধ্যম সিএনএন কিন্তু মনে করছে পাকিস্তানকে তাদের সরবরাহ করা যুদ্ধাস্ত্র বা ওয়েপেনস সিস্টেম আসল যুদ্ধে কেমন কাজে আসছে সে দিকে চীন সতর্ক নজর রাখছে।
বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সামরিক পরাশক্তি হওয়া সত্ত্বেও চীন কিন্তু দীর্ঘ চার দশকের ওপর হল নিজেরা কোনও বড় যুদ্ধ করেনি।
তবে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর আমলে চীন তাদের বিশাল সেনাবাহিনীর আধুনিকায়ন করেছে, খুব সূক্ষ ও অত্যাধুনিক অস্ত্রসম্ভার গড়ে তুলতে এবং সামরিক প্রযুক্তিকে উন্নততর করতে বিপুল পরিমাণ অর্থও লগ্নি করেছে।
এই বিনিয়োগের সুফল পেয়েছে তাদের বন্ধুপ্রতিম পাকিস্তানও – এবং চীনের আধুনিক ফাইটার জেট, মিসাইল, রাডার ও এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের পরীক্ষাগার হয়ে উঠেছে এই মিত্র দেশটি।
সিএনএন বলছে, চীনের তৈরি আধুনিক সামরিক প্রযুক্তি পশ্চিমা দেশগুলোর পরীক্ষিত মিলিটারি হার্ডওয়ারের বিরুদ্ধে কেমন কাজে আসে, তার প্রথম সত্যিকারের ঝলক দেখাতে পারে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে এই ক্রমবর্ধমান সংঘাত।
বস্তুত বুধবার চীনের তৈরি জে-১০সি এয়ারক্র্যাফট ব্যবহার করে পাকিস্তান ভারতের অত্যাধুনিক ফরাসি-নির্মিত রাফাল জেট গুলি করে ভূপাতিত করেছে, ইসলামাবাদ এই দাবি জানানোর পর চীনের প্রতিরক্ষা স্টকগুলো হু হু করে বেড়েছে।
চীনের যে 'এভিআইসি চেংডু এয়ারক্র্যাফট' সংস্থা জে-১০সি বিমান তৈরি করে থাকে, তাদের শেয়ার দর যেমন এই সপ্তাহেই ৪০% বেড়েছে।
লন্ডন ভিত্তিক থিঙ্কট্যাঙ্ক এশিয়া-প্যাসিফিক ফাউন্ডেশনের আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ সাজ্জান গোহেল এই কারণেই বলছেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে এখন যে কোনও সংঘর্ষই চীনের সামরিক রফতানির জন্য কার্যত একটা 'ডি ফ্যাক্টো' টেস্ট এনভায়রনমেন্ট বা পরীক্ষার পরিবেশ হয়ে উঠছে!
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ভারতের অপারেশন সিন্দুরের ঠিক দু'দিন আগেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন এবং গত মাসে ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পহেলগামে নিহত বেসামরিক মানুষদের প্রতি শোক ব্যক্ত করেন।
এরপর ক্রেমলিনের জারি করা এক বিবৃতিতে বলা হয়, উভয় নেতাই সব ধরনের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আপসহীনভাবে লড়াই করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
বুধবার ভারতের সামরিক অভিযানে পাকিস্তান ও পাকিস্তান শাসিত কাশ্মীরে অন্তত ৩৮ জন নিহত হওয়ার পর রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, পহেলগামে সন্ত্রাসবাদী হামলার জের ধরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক সংঘাত যে তীব্র আকার নিয়েছে তাতে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
'শান্তিপূর্ণ ও কূটনৈতিক পন্থায়' উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানিয়ে ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়া ঠেকাতে রাশিয়া চায় দু'পক্ষই সংযম প্রদর্শন করুক।
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানায়, উত্তেজনা প্রশমনের ক্ষেত্রে তিনি যদি কোনও কাজে আসেন, রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ সে চেষ্টা করতেও রাজি বলে প্রস্তাব দিয়েছেন।
তবে স্ট্র্যাটেজিক থিঙ্কট্যাঙ্ক চ্যাথাম হাউজের দক্ষিণ এশিয়া ফেলো চিতিজ বাজপাই-য়ের মতে, মস্কো এই সংকটে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিলেও এর ঠিক আগেই তারা ভারতকে যে মিসাইল সিস্টেম ডেলিভারি দিয়েছে তাতে এটা মনে করার যথেষ্ট কারণ আছে যে তাদের অবস্থান 'আদৌ নিরপেক্ষ নয়'।
দ্য সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানিয়েছে, ২২ এপ্রিল পহেলগাম হামলার ঠিক পর পরই ভারত রাশিয়ার কাছে থেকে 'ইগলা-এস' এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের একটি কনসাইনমেন্ট পেয়েছে।
এই বিশেষ ধরনের মিসাইল সিস্টেম তুলনামূলক কম উচ্চতা দিয়ে ওড়া এয়ারক্র্যাফট ও ড্রোন ইন্টারসেপ্ট করার ক্ষমতা রাখে – এবং এগুলো পাকিস্তানের সঙ্গে সীমান্ত ও কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর মোতায়েন করা হয়েছে বলেও খবর পাওয়া গেছে।
চিতিজ বাজপাই মনে করিয়ে দিচ্ছেন, শীতল যুদ্ধের সময় থেকেই রাশিয়া ও ভারতের ঘনিষ্ঠতা কিন্তু সুবিদিত। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাকিস্তানের সঙ্গে রাশিয়ার এনেগেজমেন্ট বাড়লেও মস্কো ও দিল্লির সম্পর্কে কিন্তু সেভাবে চিড় ধরেনি।
ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে গত বছরও রাশিয়া ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ৬৬ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।
ভারত যে বিপুল পরিমাণ অপরিশোধিত তেল (ক্রুড) ও সামরিক অস্ত্রসম্ভার আমদানি করে, যথাক্রমে তার ৪০ ও ৩৬ শতাংশই এখন রাশিয়া থেকে।
ঐতিহাসিক ও স্ট্র্যাটেজিক সম্পর্কের কারণেই দিল্লি কিন্তু আজও রাশিয়ার 'প্রায়োরিটি পার্টনার' – মানে সঙ্গী হিসেবে তারা ভারতকেই অগ্রাধিকার দেবে। জ্বালানি ও যুদ্ধাস্ত্রর ক্রেতা হিসেবে ভারতের গুরুত্ব সেটাকেই আরও বাড়িয়ে তুলেছে", জানাচ্ছেন চিতিজ বাজপাই।
ফলে চলমান সংঘাতে রাশিয়ার অবস্থান ভারতের দিকেই ঝুঁকে থাকবে বলে কোনও কোনও পর্যবেক্ষক মনে করছেন।