ঢাকা মঙ্গলবার, ০৬ মে ২০২৫ , ২২ বৈশাখ ১৪৩২ আর্কাইভস ই পেপার

bkash
bkash
udvash
udvash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
bkash
bkash
udvash
udvash

কবি ও কথাশিল্পী আলাউদ্দিন আল আজাদ এর জন্মদিন আজ

বিবিধ

আমাদের বার্তা ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৮:০০, ৬ মে ২০২৫

সর্বশেষ

কবি ও কথাশিল্পী আলাউদ্দিন আল আজাদ এর জন্মদিন আজ

বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, কবি ও কথাশিল্পী আলাউদ্দিন আল আজাদ এর জন্মদিন আজ। তিনি ১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে নরসিংদী জেলার রায়পুর থানার রামনগর গ্রামে। তার পিতা গাজী আব্দুস সোবহান ও মাতা আমেনা খাতুন।

আলাউদ্দিন আল আজাদ নারায়ণপুর শরাফতউল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রবেশিকা, ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অনার্সসহ স্নাতক ও স্নাতকোত্তর এবং লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের জীবন ও কবিতা বিষয়ে গবেষণা করে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। 

পরে তিনি অরগান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তুলনামূলক সাহিত্যে উচ্চ প্রশিক্ষণও গ্রহণ করেন। আলাউদ্দিন আল আজাদ অধ্যয়নকালে ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজ ছাত্র সংসদের সাহিত্য সম্পাদক ও বার্ষিকী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা জেলা যুবলীগের সভাপতি ও পূর্ব পাকিস্তান যুবলীগের সহসভাপতি ছিলেন। পাকিস্তানের প্রগতিশীল ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ততা তাকে সাহিত্যচর্চায় অনুপ্রাণিত করে। দেশ বিভাগের পরে তিনি দেশের চলমান প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন।

ছাত্রাবস্থায় আলাউদ্দিন আল আজাদ সংবাদপত্রে খন্ডকালীন চাকরি করেন। অধ্যয়ন শেষে তিনি নারায়ণগঞ্জের তোলারাম কলেজ, ঢাকা জগন্নাথ কলেজ, সিলেট এমসি কলেজ এবং চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ এ অধ্যাপনা করেন। তিনি ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন এক বছর।

কিছুকাল মস্কোতে বাংলাদেশ দূতাবাসে Education Attaché কাজ করার পর তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নজরুল প্রফেসর ও নজরুল গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন।

বিশ শতকের পঞ্চাশের দশকে সাহিত্যক্ষেত্রে তার আবির্ভাব। এ সময়ে যারা বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করে তোলার চেষ্টা করেন, তিনি তাদের মধ্যে অন্যতম। প্রগতিশীল ও মানবতাবাদী ভাবধারায় তিনি সাহিত্যচর্চা করেছেন। প্রথম জীবনে গ্রামের মানুষ ও তাদের সংগ্রাম, প্রকৃতির ঐশ্বর্য ও সংহারমূর্তি দুইই তার মনে ছাপ ফেলে গেছে। নগরজীবনের কৃত্রিমতা, রাজনীতিক সংগ্রাম, নিপীড়ন, প্রতারণা তিনি তার কথাসাহিত্যের বিষয়বস্ত্ত করেছেন। 

এ পর্যায়ের তার উল্লেখযোগ্য গল্পগ্রন্থ জেগে আছি, ধানকন্যা, জীবন জমিন প্রভৃতি। ষাটের দশকে রচিত তার উপন্যাস ‘তেইশ নম্বর তৈলচিত্র’ ও ‘কর্ণফুলী’ ব্যাপক সাড়া জাগায়। ‘তেইশ নম্বর তৈলচিত্র’ উপন্যাসটির বিষয়বস্ত্ত অবলম্বনে বসুন্ধরা নামে চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক সুভাষ দত্ত।

এ চলচ্চিত্রটি দেশে-বিদেশে ব্যাপক প্রশংসিত হয়। তার অন্যান্য উপন্যাসের মধ্যে শীতের শেষরাত বসন্তের প্রথমদিন, ক্ষুধা ও আশা, শ্যামল ছায়ার সংবাদ উল্লেখযোগ্য। তার মরক্কোর যাদুকর, মায়াবী প্রহর ও ধন্যবাদ অত্যন্ত জীবনঘনিষ্ঠ নাটক। তার অন্যান্য নাটকের মধ্যে ধন্যবাদ, নিঃশব্দ যাত্রা, নরকে লাল গোলাপ প্রধান। তার দুটি কাব্যনাট্য ইহুদির মেয়ে ও রঙিন মুদ্রারাক্ষস ।

আলাউদ্দিন আল আজাদের কাবগ্রন্থগুললোর মধ্যে মানচিত্র, ভোরের নদীর মোহনায় জাগরণ, লেলিহান পান্ডুলিপি, নিখোঁজ সনেটগুচ্ছ, সাজঘর ও শ্রেষ্ঠ কবিতা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

আলাউদ্দিন আল আজাদ ভাষা আন্দোলনের গণমুখী ও স্বদেশপ্রেমী সাহিত্যধারার লেখক ছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধিকার আন্দোলনের সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ তাকে প্রেরণাদীপ্ত দায়িত্ববান শিল্পীর ভূমিকা গ্রহণে উজ্জীবিত করে। মানুষ ও সমাজ আলাউদ্দিন আল আজাদের সাহিত্য ভাবনার কেন্দ্রবিন্দু। 

সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য আলাউদ্দিন আল আজাদ বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হন। তার মধ্যে বাংলা একাডেমি পুরস্কার, ইউনেস্কো পুরস্কার, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, একুশে পদক, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ স্বর্ণপদক উল্লেখযোগ্য। আলাউদ্দিন আল আজাদ ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দের ৩ জুলাই ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।

 

জনপ্রিয়