
ইসরায়েলের পাল্টা হামলার ঘটনাকে বেশ ছোট করেই দেখাতে চাইছেন ইরানিরা। যেনো এর কোনো গুরুত্ব নেই। তারা বলেছেন, কোনো হামলা হয়নি। ক্ষুদ্রাকৃতি ড্রোনের রম্য ছবি প্রচার করছে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম। এতে কয়েকটি প্রশ্ন জাগ্রত হচ্ছে। ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডের অপেক্ষাকৃত কট্টর অংশ কি পাল্টা জবাব দেবে? ইসরায়েল কি আরো হামলার পরিকল্পনা করছে?
প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সাথে ইতিমধ্যেই দূরত্ব বেড়েছে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের। সেটি হয়তো আর বাড়াতে চাননি নেতানিয়াহু। যে কারণে এই ধরনের হামলার পদক্ষেপটি নিয়ে থাকতে পারেন তিনি। ইরানের শনিবারের হামলার জবাবে ইসরায়েলকে আর পাল্টা হামলা না চালাতে বলেছিলেন বাইডেন। যেনো 'জয়টা ইসরায়েলের' অনুকূলেই থাকে। ব্রিটেনসহ অন্য মিত্ররাও যার যার জায়গা থেকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছিলো।
যদি গতকালের আক্রমণ তারই প্রতিফলন হয়, তাহলে আরেকটা প্রশ্ন দাঁড়ায়। এটা কি ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভায় থাকা সাবেক জেনারেলদের প্রত্যাশা অনুযায়ী যথেষ্ট শক্ত পদক্ষেপ হলো, ইসরায়েলের শত্রুদের নিরস্ত করতে যে পদক্ষেপ জরুরি বলে মনে করছিলেন তারা।
নেতানিয়াহু’র অতিজাতীয়তাবাদী শরিকরাও একটা প্রচণ্ড প্রতিশোধের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। একজন তো বলেই বসেন, ইসরায়েলের ‘নৃশংস’ হওয়া উচিত।
পশ্চিমা দেশগুলোর মতে, ওই অঞ্চলের ভালোর জন্য ইরান এবং ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপের ইতি টানা উচিত। এই পাল্টাপাল্টি আক্রমণের শুরুটা হয় দামেস্কে ইরানি কূটনৈতিক স্থাপনায় ইসরায়েলের হামলার মধ্য দিয়ে। তিনজন জেনারেলসহ অন্তত সাতজন মারা যান ওই হামলায়।
এমনকি এই পর্যায়ে এসেও যদি ঘটনাপ্রবাহটা থামে, নতুন দৃষ্টান্ত কিন্তু স্থাপিত হয়েই গেল। ইরান সরাসরি ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামলা চালিয়েছে, জবাবে ইরানের ভূখণ্ডে সরাসরি হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল, যা আগে কখনও ঘটেনি।
ওই অঞ্চলে ইরান এবং ইসরায়েলের মধ্যে দীর্ঘদিনের সংঘাতে দুই দেশের অভ্যন্তরে সরাসরি হামলা না চালানোটাই যেন ‘রুলস্ অব দ্য গেম’ (খেলার নিয়ম) ছিল এতদিন।
ফলে, দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের ছদ্মবেশী সেই যুদ্ধ ছায়া থেকে বেরিয়ে এলো এবার।