
পুলিশ পরিচয় দিয়ে বসতঘরে ঢুকে পরিবারের আট সদস্যকে বেঁধে মারধর ও বাড়িসংলগ্ন ছয়টি দোকানঘর মাটির সঙ্গে গুঁড়িয়ে দিয়ে ব্যাপক লুটপাট চালিয়েছে মুখোশধারীরা।
বৃহস্পতিবার (১ মে) ভোরের দিকে ঝালকাঠি জেলার কাঠালিয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের আনইলবুনিয়া গ্রামের বটতলা বাজারের হারুন অর রশিদের বসতঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
ক্ষতিগ্রস্থ হারুন অর রশিদের অভিযোগ, আনইলবুনিয়া গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে স্থানীয় ব্যবসায়ী নাসির খান সরোয়ারের ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা ভোর ৪টায় মুখোশ পরে রামদা ও দেশীয় অস্ত্রের মুখে আমাকে ও আমার স্ত্রী রোজিনা বেগম (৫০), ছেলে মেহেদী (২৮), পুত্রবধু লাকী (২৪), প্রতিবন্ধী মেয়ে শিরিন আক্তার (৩০), মেয়ে সাবরিনা (২১), ফাতেমা (১৯) স্কুল পড়ুয়া মেয়ে জান্নাতুল মাওয়াকে (১৪) হাত-পা ও মুখ বেঁধে কিল-ঘুষি ও লাথি মারে। এসময় ঘরে লুটতরাজ চালিয়ে আট ভরি স্বর্ণ, পাঁচটি মোবাইল ফোন ও নগদ ৭৪ হাজার টাকা এবং জমা-জমির দলিলপত্র নিয়ে যায়।
তিনি আরো বলেন, ‘বাহিরে থাকা অর্ধশত সন্ত্রাসী বাহিনী বসতঘর সংলগ্ন কাঠালিয়া-আমুয়া সড়কের বটতলা বাজারে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়। এখানে মুদি-মনোহরি দোকানসহ, কসমেটিক্স, মুরগির পোল্ট্রির দোকান, চায়ের দোকান, কনফেকশনারি প্রভৃতি ছয়টি দোকান ছিলো। এসময় হামলাকারী দুর্বৃত্তরা দোকানে থাকা এক লক্ষ তিন হাজার নগদ টাকা, পাঁচ লক্ষ সাত হাজার টাকার মুদি মালামাল, চাল, চিনি, আটা, ময়দা, ডাল, চিড়া, কলা, সুপারিসহ চার লক্ষ টাকার বিভিন্ন মালামাল নিয়ে যায়।’
তার ছেলে মেহেদী জানান, হামলা ও লুটপাটের সময় আমার আত্মীয়-স্বজনরা খবর পেয়ে জাতীয় পরিসেবার সাহায্যের জন্য ৯৯৯ নম্বরে ফোন দেন, এর আড়াই ঘণ্টা পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে আমাদের হাত-পা ও মুখের বাঁধন খুলে দেন। পরবর্তীতে আমরা একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করি। তবে পুলিশ এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। কিন্তু সরোয়ারের লোকজন ইট, বালু, কাঠ, টিন মজুত করে রেখেছে, রাঁতের অন্ধকারে ঘর তোলার চেষ্টা চালাতে পারে।
বটতলা বাজার কমিটির সহ সভাপতি মো. মাঈনুদ্দিন জানান, এখানে হারুনের ঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিলো। রাতে কে বা করা ভেঙেছে, তা আমরা দেখিনি, তবে শুনেছি। হারুন এখানে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করে আসছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ব্যবসায়ী নাসির খান সরোয়ারের ফোনে অনেকবার কল দিলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
কাঠালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মং চেনলা ঘটনার কথা শিকার করলেও ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি।