
ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে অনুষ্ঠিত বিশ্বের নগর উন্নয়ন ও জনস্বাস্থ্য বিষয়ে অন্যতম বৃহৎ সম্মেলন ‘পার্টনারশিপ ফর হেলদি সিটিজ সামিট ২০২৫’ থেকে সহনশীল সমাজ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ড. টেড্রোস আধানম গেব্রেয়েসুস।
সামিটে বাংলাদেশ থেকে অংশ নেওয়া ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ ঢাকার ভবিষ্যৎ উন্নয়ন প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমি স্লোগাননির্ভর হেলদি সিটি বা গ্রিন সিটি এসব না বলে, ঢাকাকে ন্যায্যতার শহর বানাতে বলছি। সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে না পারলে জুলাই গণঅভ্যুত্থান ব্যর্থ হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গুলশান-বনানীতে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। এবার পিছিয়ে পড়া অংশে নজর দিতে হবে।’
সামিটের বিষয়ে তিনি জানান, ‘পার্টনারশিপ ফর হেলদি সিটিজ’ ইতোমধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনকে বায়ুদূষণ পরিমাপের যন্ত্র সরবরাহসহ বিভিন্নভাবে সহায়তা করছে। এবারের সামিটে সময় ও জনস্বাস্থ্য বিষয়ে বিশদ আলোচনা হয়েছে। সামিটের দ্বিতীয় দিন বাংলাদেশি সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেছেন।
প্যারিসসহ উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে নগর বা সিটি পুলিশ ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, সমস্যার ক্ষেত্রে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়াসহ সিটি কর্পোরেশনের আলাদা পুলিশ ইউনিট থাকা উচিত।’
এছাড়া ছাত্রদের জন্য নগর ছাত্রাবাস, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য বিশ্রাম নেওয়ার স্থান এবং শহরজুড়ে পাবলিক টয়লেট বা শৌচাগার স্থাপনের মতো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
সামিটে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ড. টেড্রোস আধানম গেব্রেয়েসুস বলেন, ‘শহরগুলো অসংক্রামক রোগ এবং আঘাতের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রথম সারিতে রয়েছে। কর্ডোবা, ফোর্টালেজা এবং গ্রেটার ম্যানচেস্টারে যে অগ্রগতি হয়েছে, তা শুধু সাময়িক স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি করছে না বরং অন্যদের অনুসরণের জন্য একটি মডেলও তৈরি করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা শহরগুলোর সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যাতে সকলের জন্য আরও স্বাস্থ্যকর, নিরাপদ এবং সহনশীল সমাজ গড়ে তোলা যায়।’
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে চালু হওয়া ‘পার্টনারশিপ ফর হেলদি সিটিজ’ একটি বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক। বর্তমানে এতে ৭৪টি শহর যুক্ত রয়েছে, যেখানে অসংক্রামক রোগ এবং আঘাত প্রতিরোধে কাজ করা হচ্ছে।
ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিজ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ভাইটাল স্ট্র্যাটেজিজ এবং প্যারিস নগর কর্তৃপক্ষের যৌথ আয়োজনে এই সম্মেলনে পার্টনারশিপ ফর হেলদি সিটিজ নেটওয়ার্কের ৬১টি শহরের মেয়র ও প্রতিনিধিরা অংশ নিচ্ছেন।