
কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার রাখাইনে কথিত মানবিক করিডর দেয়ার বিরোধিতা করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে আরেকটি প্রক্সি ওয়ারে জড়াতে চায়। আজ শুক্রবার দুপুরে বগুড়া প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
এ ব্যাপারে অন্তর্বর্তী সরকারকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে ফরহাদ মজহার বলেন, ‘বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের পক্ষের একজন মানুষ হিসেবে বলব যে, এই ধরনের করিডর দেয়া উচিত নয়। আপনি (অন্তর্বর্তী সরকার) যদি মনে করেন যে রাখাইনের ব্যাপারটা গুরুত্বপূর্ণ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে আমাদের ব্যবহার করতে চাইছে, বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করতে চাইছে আরেকটি প্রক্সি ওয়ারে জড়াবে, আমি চাই না বাংলাদেশের সেনাবাহিনী এ ধরনের প্রক্সি ওয়ারে জড়িয়ে যাক।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে আবারও নির্বাচিত সরকার হিসেবে দাবি করে ফরহাদ মজহার বলেন, এই সরকারকে উৎখাত করার জন্য নির্বাচনের দাবি করা হচ্ছে। নির্বাচনের জন্য ক্রমাগতভাবে চাপ দেয়া হচ্ছে। ফলে এই সরকারের পক্ষে টিকে থাকা সম্ভব নয়।
ফরহাদ মজহার সংস্কার কমিশন গঠনের সমালোচনা করে বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে জনগণের অভিপ্রায় বুঝতে হবে। জনগণের অভিপ্রায় বুঝতে হলে জনগণের কাছে যেতে হবে। আমরা আশা করেছিলাম যে, গণ-অভ্যুত্থানের পর আমরা যে সরকার কায়েম করেছি, এই সরকার জনগণের কাছে যাবে। কিন্তু তাঁরা এটা করলেন না। তাঁরা ওপর থেকে অনেকগুলো কমিশন বসিয়ে দিলেন। কমিশনগুলো ঢাকা শহরে বসে বসে আলোচনা করল। তারা জনগণকে ডাকেনি, তাদের কথা শোনেনি। যদি জনগণকেই আমরা অস্বীকার করি, তাহলে কী করে আমরা সত্যিকার অর্থে নতুন যে বাংলাদেশ বানাতে চাই, সেটা কী করে সম্ভব?’
সংসদ নির্বাচনের আগে গণপরিষদ নির্বাচনের প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরে ফরহাদ মজহার বলেন, ‘যারা আইন বোঝে, রাজনীতি বোঝে, কিন্তু দল বোঝে না, তাদের আমরা গণপরিষদ নির্বাচনে পাঠাব। তারা বসে খসড়া গঠনতন্ত্রের বিষয়ে তর্ক-বিতর্কের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ একটি খসড়া গঠনতন্ত্র পাস করবে। তারপর গণভোট হবে। জনগণ তাতে সম্মতি দিলে তা নতুন গঠনতন্ত্র হিসেবে চূড়ান্ত হবে। সেই নতুন গঠনতন্ত্রের অধীনে নতুন সরকার গঠনের নির্বাচন হবে।’