…. পাঞ্জাব প্রদেশের সব স্কুল, কলেজ বন্ধ ঘোষণা। পিছিয়ে দেয়া হয়েছে পরীক্ষাও….
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ‘অন্যায়ভাবে’ গ্রেফতারের প্রতিবাদে গতকাল বুধবার পাকিস্তানে ১২ ঘণ্টার হরতাল ডাকে তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টি (পিটিআই)। দলটির ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মেহমুদ কোরেশি অভিযোগ করেন, ইমরানকে আইনি পরামর্শ দেওয়ার সুযোগটুকুও দিচ্ছে না প্রশাসন। তাঁকে আইনজীবীদের সঙ্গেও দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না।
পাকিস্তানের জনপ্রিয় দৈনিক ডন জানায়, ইমরানকে ইসলামাবাদ পুলিশ লাইনসে বিশেষ আদালতে পেশ করা হয়। তাকে ১৪ দিন নিজেদের হেফাজতে চেয়ে আদালতের কাছে আবেদন করে ‘ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরো’ (এনএবি)।
এদিকে ইমরানের গ্রেফতার নিয়ে জ্বলছে পাকিস্তান। ইসলামাবাদ থেকে লাহোর, করাচি থেকে পেশোয়ার— সর্বত্র পথে নেমে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন পিটিআই সমর্থকেরা। তাদের ডাকা হরতালের পরিপ্রেক্ষিতে পাঞ্জাব প্রদেশে সমস্ত স্কুল, কলেজ বন্ধ করার কথা ঘোষণা হয়েছে। পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে পরীক্ষাও। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ চলছে পিটিআই সমর্থকদের। টায়ার পুড়িয়েও বিক্ষোভ দেখানো চলছে। পুলিশ এবং নিরাপত্তাবাহিনীকে লক্ষ্য করে ইট, পাটকেল ছোড়ার ঘটনাও জারি রয়েছে। হরতালের জেরে পাকিস্তানের বড় শহরগুলোতে বন্ধ অধিকাংশ দোকানপাট।
গোলমালের আশঙ্কায় মঙ্গলবার বিকেল থেকেই দেশের বিশাল অংশে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা স্তব্ধ। বুধবারও তা জারি রয়েছে। সিন্ধের মুখ্যমন্ত্রী মুরাদ আলি শাহ জানিয়েছেন, কাউকে নিজের হাতে আইন তুলে নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে না। মঙ্গলবার গভীর রাতে লাহোরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন মুরাদ আলি। প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় পরামর্শও দিতে দেখা যায় তাঁকে। তিনি বলেন, প্রতিবাদের নামে সরকারি সম্পত্তিতে আগুন দেওয়া হচ্ছে। অভিযুক্তদের অতি দ্রুত আইনের আঙিনায় আনা হবে।
পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ জানিয়েছেন, ইমরান এনএবি-এর হেফাজতে রয়েছেন।
এ দিকে পিটিআইয়ের অভিযোগ, দলের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উমরকে ইসলামাবাদ হাই কোর্ট চত্বর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারের খবর স্বীকার করেছেন আইনজীবী ফয়সাল চৌধুরি। পেশায় আইনজীবী আসাদকে ইমরানের কায়দাতেই গ্রেফতার করা হয়েছে বলে অভিযোগ পিটিআইয়ের। কিন্তু কোনও মামলায় তার গ্রেফতার হল, তা স্পষ্ট নয়।
ইমরানের দল গ্রেফতারের বিষয়টিকে সুপ্রিম কোর্টে টেনে নিয়ে যেতে চায়। প্রসঙ্গত, ইমরানের গ্রেফতার নিয়ে কোনও ধরনের আপত্তি জানায়নি ইসলামাবাদ হাই কোর্ট। তবে যেভাবে দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে আদালত। অবশ্য পিটিআইয়ের আপত্তি ইমরানের গ্রেফতার নিয়েই। এই আপত্তির বিষয়টি নিয়েই তারা পাকিস্তানের শীর্ষ আদালতে আবেদন করতে চলেছে। পিটিআইয়ের দাবি, আদালত ইমরানের গ্রেফতারকে বেআইনি ঘোষণা করুক।
