ঢাকা শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪ , ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ আর্কাইভস ই পেপার

nogod
nogod
bkash
bkash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
nogod
nogod
bkash
bkash

মূল্যায়নে অবহেলা ও শিক্ষাবোর্ডের পদক্ষেপ

মতামত

মাছুম বিল্লাহ

প্রকাশিত: ০০:০০, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

সর্বশেষ

মূল্যায়নে অবহেলা ও শিক্ষাবোর্ডের পদক্ষেপ

এসএসসি পরীক্ষায় খাতা মূল্যায়নে অবহেলা করায় পরীক্ষকের দায়িত্বে থাকা ৩৯ জন শিক্ষককে কালো তালিকাভুক্ত করেছে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চম্যাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। তারা আগামী পাঁচ বছর বোর্ডের অধীনে কোনো পাবলিক পরীক্ষায় দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না। গত ৫ সেপ্টেম্বর কালো তালিকাভুক্ত শিক্ষকদের নামের তালিকা প্রকাশ করে ঢাকা বোর্ড। বোর্ড জানায়, পরীক্ষার খাতা দেখায় অবহেলা আর সহ্য করা হবে না।

এসব পরীক্ষক খাতা দেখায় অবহেলা করায় চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় বহু শিক্ষার্থীর ফল ফেল আসে। পরে খাতা পুনর্নিরীক্ষণ করে দেখা যায় তারা পাস করেছেন। খাতা মূল্যায়নে অবহেলার কারণে বোর্ড কর্তৃপক্ষ অন্তত কিছু একটি করেছেন, এটি ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। ২৮ জুলাই চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। ফল প্রকাশের পর ঢাকা বোর্ডে ৭৩ হাজার শিক্ষার্থী ফল পুনর্নিরীক্ষার বা খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন করেন। ২৮ আগস্ট খাতা চ্যালেঞ্জের ফল প্রকাশের পর দেখা যায় এ বোর্ডে ফেল থেকে পাস করেছেন ১০৪ জন শিক্ষার্থী। আর নতুন জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৩৬২ জন পরীক্ষার্থী। এ বোর্ডের মোট ৩ হাজার ৮৫ জন পরীক্ষার্থীর ফল পরিবর্তন হয়েছে। ঢাকা বোর্ডের ৭৩ হাজার ৪৬ জন পরীক্ষার্থী ১ লাখ ৯১টি খাতা পুনর্নিরীক্ষার আবেদন করেছিলেন।

খাতা মূল্যায়নে দায়িত্বহীনতা ও অবহেলার কারণে কালো তালিকাভুক্ত হওয়াদের তালিকায় আছেন বাংলা দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষক, ইংরেজি প্রথম পত্রের পরীক্ষক, ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষক, গণিতের পরীক্ষক, উচ্চতর গণিতের পরীক্ষক, বিজ্ঞান বিষয়ের পরীক্ষক, রসায়ন, বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়, ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিষয়ের পরীক্ষক। বোর্ডের খাতা মূল্যায়ন করার ক্ষেত্রে শুধু অভিজ্ঞ কিংবা নামকরা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক হলেই চলে না, সর্বোপরি যারা সিনিয়র এবং পেশার প্রতি যাদের কমিটমেন্ট আছে এবং যারা প্রাইভেট কম পড়ান তাদেরকে অগ্রাধিকার দেয়া উচিত। শিক্ষকতা জীবনে বোর্ডের পরীক্ষক হিসেবে যেসব বাস্তব বিষয় অবলোকন করেছি, যেসব তিক্ত অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছি সেই থেকে এই মহান ও পবিত্র দায়িত্ব যে সবার ওপর অর্পণ করা ঠিক নয় সেটি ভালোভাবে বুঝেছি এবং বিষয়টি জাতিকে জানানোর জন্য বেশ কয়েকবার দৈনিক শিক্ষাডটকমসহ কয়েকটি পত্রিকার আশ্রয়  নিয়েছিলাম। কিন্তু শিক্ষার বিষয়ে কারই বা এতো আগ্রহ আছে, যাদের পড়ার কথা তারাই পড়েন না। বাকিরা কেনো পড়বেন?

১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দে আমি তখন ঘাটাইল ক্যান্টনমেন্ট কলেজে শিক্ষকতা শুরু করি। ঢাকা বোর্ড থেকে উচ্চমাধ্যমিকের খাতা পরীক্ষণের জন্য চিঠি পেলাম। সে এক আলাদা আনন্দ ও নিজেকে অনেক সম্মানিত বোধ করছিলাম। চিঠিতে লেখা সকাল সাড়ে আটটার মধ্যে বোর্ড অফিসের সম্মেলন কক্ষে এক আলোচনা সভা ও খাতা পরীক্ষণের নিয়ম কানুনের ওপর একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হবে। আমি ওইদিন সকাল আটটায় বোর্ডে হাজির হয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, এতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সকাল সাড়ে আটটায় কেনো, আধ ঘণ্টা আগে উপস্থিত হই এবং আরো ভেবেছিলাম, ঢাকা বোর্ডের সম্মেলন কক্ষ নিশ্চয়ই শীততাপ নিয়ন্ত্রিত কোনো কক্ষ এবং শিক্ষকদের বসার স্থানও সে রকম উন্নতমানের হবে। কারণ, এখানে বসেই সব গুরুত্বপূর্ণ  সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। কিন্তু সকাল সাড়ে আটটা তো দূরের কথা, দুপুর বারোটার দিকে দেখলাম দুয়েকজন শিক্ষক হাতে একটি করে চটের বস্তা নিয়ে আস্তে আস্তে সম্মেলন কক্ষের দিকে আসছেন। আর সম্মেলন কক্ষটি এসি তো দূরের কথা, ভাঙাচোরা শব্দ করা ফ্যান আর বসার জন্য বিয়ের ডেকোরেটর থেকে সম্ভবত ভাড়া করা কাঠের ফোলডিং চেয়ার। গ্রীষ্মকাল, বেশ গরম পড়ছিলো। দুপুর একটার দিকে মিটিং শুরু হলো। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এসে শিক্ষকদের সামনে কথা বলা শুরু করলেন, অমনি সঙ্গে সঙ্গে বেশ কিছু শিক্ষক দাঁড়িয়ে বললেন, গত বছর খাতা দেখার বিল এখনো পাইনি, এবার বিল না পাওয়া পর্যন্ত কোনো খাতা নেবো না। শুরু হলো চিৎকার চেঁচামেচি। মোটামুটি উপস্থিত সবাই তাতে অংশ নিলেন। একপর্যায়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তার অসহায়ত্বের কথা বললেন। শিক্ষার এই করুণ হাল দেখে পুরোটাই আশা ভঙ্গ হয়েছিলো আমার। তখন ভেবেছিলাম আমার দেশের শিক্ষার এই করুণ হাল! কবে দূর হবে এসব? আমরা পদে পদে আমলাদের দোষ দিই। কিন্তু শিক্ষাবোর্ডে তো আমলা নেই, শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপকরা মূল বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ করেন। সেখানে শিক্ষকদের বসার ভালো ব্যবস্থা এবং অন্যান্য বিষয় অনেকটাই স্মার্ট হতে পারতো। এতোদিনে হয়তো অনেক পরিবর্তন হয়েছে! পরের বছর ঢাকা বোর্ডের ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষক। ঢাকা সিটির দুটো কলেজের খাতা পেলাম। খাতা পাওয়ার সপ্তাহ খানেকের মধ্যে ঢাকা থেকে ১৮-২০ জন শিক্ষার্থীর একটি দল ঘাটাইলে চলে গেছেন। ক্যান্টনমেন্ট বিধায় ভেতের কেউ যাননি বা যেতে পারেননি।

আমাদের কলেজেরই লোকাল এক ছাত্রের মাধ্যম খবর পাঠালেন তাদেরকে পাস করিয়ে দিলে তারা সবাই মিলে মোটা একটি অঙ্কের টাকা আমাকে দেবেন। উল্লেখ্য, ওই সময়ে ইংরেজিত পাস করা ছিলো একটি কঠিন বিষয়। আমি ওই ছেলেকে  বলেছিলাম, আমি জীবনে কী হবো জানি না, আমার মনের এখন যে অবস্থা সেটি কতোদিন থাকবে তাও জানি না, তবে মনে রেখো আমাকে এসব বলে লাভ নেই। আমি শিক্ষক, আমি আর্থিক দরিদ্র কিন্তু টাকার লোভ আমাকে দেখিও না। ছেলেটি তখন বলেছিলেন, সিনিয়র কিছু শিক্ষক যারা অন্যান্য কলেজে শিক্ষকতা করেন, তারা তো সহজেই করে দেন। আমি উত্তরে বলেছিলাম, কে কী করেন সেটি আমার জানার দরকার নেই, অমি পারবো না। অবাক করা বিষয় যে, বোর্ডের খাতা কোনো পরীক্ষকের কাছে গেছে শিক্ষার্থীরা বোর্ডে ঘুষ দিয়ে দ্রুত জেনে যেতেন। এখন সেই সিস্টেম নেই, কোড নম্বর করায় অনেকটাই নিরাপদ। কিন্তু সার্বিক অবস্থার খুব একটা পরিবর্তন বোধকরি হয়নি। 

তারপর ক্যাডেট কলেজে যোগদান করি, সিলেট ক্যাডেট কলেজ-শিক্ষাবোর্ড বোর্ড কুমিলা। তারপর কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজে বদলি হই। কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডে খাতা আনতে গিয়ে প্রতি বছরই একই চিত্র, বরং আরো ভয়াবহ চিত্র দেখতাম সেটি এসএসসি-র খাতার চেয়ে উচ্চমাধ্যমিকের খাতা আনার সময় যেনো এ বিষয়গুলো বেশি ঘটতো। একবার পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হাতজোড় করে  শিক্ষকদের কাছে ক্ষমা চাচ্ছেন। আর বলছেন, ‘এই চেয়ারে আপনারা আসেন, বসেন, দেখেন কতো কঠিন। আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া আমি কীভাবে কাজ করবো?’ বুঝলাম কলেজ থেকে ডেপুটেশনে যাওয়া শিক্ষকরা যতো বড় পদেই থাকুন না কেনো তারা অনেকটাই অসহায়। হয়তো এটিরও অনেক পরিবর্তন হয়েছে (কারণ, এখনো এসব পদগুলো অনেকটাই রাজনৈতিক) তবে পত্রপত্রিকার সংবাদ মাঝে মাঝে বিচলিত করে এবং স্মরণ করিয়ে দেয় যে, অবস্থা ভালোতো হয়নি বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে আরো খারাপ হয়েছে। 

কুমিল্লা থেকে মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজে চলে এলাম। আবার ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষক। মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ থেকে চাকরি ইস্তফা দিয়ে রাজউক উত্তরা মডেল কলেজে যোগদান করলাম অর্থাৎ ঢাকা বোর্ডেরই পরীক্ষক। প্রতি বছরই বোর্ডে খাতা আনতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতাম। ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক শিক্ষকদের খাতা মূল্যায়নের বিভিন্ন কাণ্ড কারখানা প্রমাণসহ দেখাতেন। কিছু শিক্ষক বোর্ডের খাতা নিয়ে পাশের দেশে চলে গেছেন। জীবনে আর ফিরে আসেননি। এক শিক্ষক খাতা নিয়ে লঞ্চে উঠেছিলেন, লঞ্চডুবি হয়েছে সঙ্গে খাতা ডুবিও। এক শিক্ষক খাতার বৃত্ত ভরাট করিয়েছেন কাজের মেয়ের দ্বারা, সে সবগুলো বৃত্ত ভরাট করে রেখেছে। স্বভাবতই, ফল বিড়ম্বনা। আমার জানা এক শিক্ষক উচ্চমাধ্যমিকের ইংরেজি খাতা দেখিয়েছিলেন তার স্ত্রীর দ্বারা, যিনি নিজেও ওই বছরই উচ্চমাধ্যমকি পরীক্ষা দিয়েছিলেন এবং ইংরেজিতে ফেল করেছিলেন। এক পরীক্ষক এক বান্ডিল খাতা বাসে ফেলে রেখে বাসায় চলে গেছেন। বাসের কন্ডাকটর রাতের বেলা গাড়ি পরিষ্কার করার সময় বান্ডিলটি পান এবং পরদিন সকালে পরিচিত কারোর সঙ্গে আলাপ করার পর এক সাংবাদিকের হাতে খাতার বান্ডিল তুলে দেন। তিনি জায়গামতো বান্ডিলটি পৌঁছে দিয়েছিলেন তাই সকাল বেলা মন্ত্রণালয় থেকে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে ডেকে পাঠিয়েছেন তৎকালীন মন্ত্রী। 

এক শিক্ষার্থী এক বিষয়ে পেয়েছেন ৯১, শিক্ষক বৃত্ত ভরাট করেছেন ১৯। অভিভাবক বাধ্য হয়ে মামলা করেছিলেন। আমারই পরিচিত অন্য একজন পরীক্ষক পরীক্ষার ফল বের হওয়ার আগে এক হাজার খাতা নিয়ে গা ঢাকা দিয়েছিলেন। বোর্ড কর্তৃপক্ষ পদক্ষেপ নেয়ায় পুলিশ কর্তৃক বিভিন্ন জায়গা থেকে খাতা উদ্ধার করা হয়। এসব ঘটনা প্রতিবছরই ঘটে থাকে। বোর্ড কর্তৃপক্ষ তাই, টেস্ট পরীক্ষার মার্কসও বোর্ডে পাঠাতে বলেন। কোনো কারণে খাতা মিসিং হলে যাতে শিক্ষার্থীদের ওই মার্কস বসিয়ে অন্তত সমস্যার সমাধান করা যায়। বোর্ডের খাতা প্রায় বছরই দুয়েক বান্ডিল পেতাম যাতে নাম লেখা ছাড়া কিছুই থাকতো না। এখন নাকি বোর্ড থেকে বলা হয় কোনোভাবে শিক্ষার্থীদের ফেল করানো যাবে না। আমি যে বোর্ড থেকে একেবারে সাদা খাতা প্রায় বছরই পেতাম, তাদের কীভাবে পাস করানো হবে? অনেক মেয়ে খাতায় লিখে রাখতো এই তার শেষ পরীক্ষা, পরীক্ষায় ফেল করলে তার আর বিয়ে হবে না ইত্যাদি ইত্যাদি। 

শিক্ষাবোর্ডগুলোতে থাকে সিন্ডিকেট। যারা সেখানকার স্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারী তাদের আলাদা দৌরাত্ম। ডেপুটেশনে যেসব শিক্ষকরা যান তারা মোটামুটি পদ বাঁচানোর জন্য মানিয়ে চলেন তবে দু’চারজন যারা একটু স্বাধীনভাব কাজ করতে চান এবং ক্রিয়েটিভ তারা কিছু পরিবর্তন আনার চেষ্টা করেন। যেমন-কোনো কোনো পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও চেয়ারম্যানের আমলে শিক্ষকদের খাতা দেখার এক বছরের সম্মানী পরের বছরও পাওয়া যায় না। আবার কারো আমলে অতি দ্রুত এসব ব্যবস্থা হয়। তার মানে হচ্ছে যেসব চেয়ারম্যান ও কন্ট্রোলার একটু তৎপর তারা অনেক কাজ করতে পারেন। বোর্ডগুলো কিন্তু স্বায়ত্তশাসিত। কিন্তু বছরে ডাবল ডাবলে বোনাস নেয়া ছাড়া নিজেদের সেই স্বায়ত্তশাসন তারা কতোটুকু কাজে লাগাতে পারেন বা লাগান সেটি প্রশ্নসাপেক্ষ। দেখা যায় মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ বা ইশারা ছাড়া তারা কিছুই করতে চান না। ফলে একটি ট্র্যাডিশন হয়ে গেছে এবং মন্ত্রণালয়ের আমলারা সেভাবই আচরণ করেন বোর্ডের সঙ্গে। 

কিছু পরীক্ষককে দেখেছি সর্বোচ্চ সততার সঙ্গে, সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বোর্ডের খাতা মূল্যায়ন করেছেন। তদের অনেকেই আজ পৃথিবীতে নেই। আবার এমন কিছু পরীক্ষককেও দেখেছি যারা আমাকে বলতেন ‘খাতায় বেশি বেশি নম্বর দেবেন। বেশি নম্বর দিলে রিস্ক কম। কেউ আপনাকে কিছু বলবেন না। কিন্তু যদি কম দেন তাহলেই দেখবেন যতো ঝামেলা। অর্থাৎ মূল্যায়ন কিন্তু হচ্ছে না এসব শিক্ষকদের কাছে। আবার কিছু পরীক্ষক বোর্ডের খাতা বার বার নিয়ে আসতেন। তারা বলতেন, একটি খাতা দেখে ফেলতে পারলেই তো ১২-১৫ টাকা। এতো সময় নষ্ট করার কী আছে। শেক্সপিয়রের ‘এস’ দেখলেই নম্বর দিয়েছি। এর ফলে আমরা দেখি যেসব শিক্ষার্থী ফেলের খাতায় থাকতেন তারাও তাদের কল্পনার বাইরে নম্বর পেয়ে পাস করেন। এখন যেটি হয়েছে শিক্ষার্থীদের কোনোভাবেই নাকি ফেল করানো যাবে না। ফলে শিক্ষকরাও সেই রকম করেন। আর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে আমরা মূল্যায়ন নিয়ে যতো আলোচনা, যতো কথা বলি কীভাবে শিক্ষার্থীদের শেখানো হবে বা তারা কীভাবে শিখবেন এসব নিয়ে তার সিকি ভাগের একভাগ কথাও বলি না। আমরা যদি শিক্ষার্থীদের কোনো বিষয় শেখাতেই না পারি তাহলে কী মূল্যায়ন করবো?

লেখক: লিড-এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ টিম, দৈনিক শিক্ষাডটকম ও দৈনিক আমাদের বার্তা 

জনপ্রিয়