ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫ , ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ আর্কাইভস ই পেপার

bkash
bkash
udvash
udvash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
bkash
bkash
udvash
udvash

জীববৈচিত্র্যের ওপর জলবায়ুর অভিঘাত

মতামত

সাধন সরকার

প্রকাশিত: ০৭:৩০, ২২ মে ২০২৫

সর্বশেষ

জীববৈচিত্র্যের ওপর জলবায়ুর অভিঘাত

আজ ২২ মে। আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য দিবস। ১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দের আজকের এই দিনে কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে বায়োডাইভার্সিটি (সিবিডি) চুক্তি অনুযায়ী জীববৈচিত্র্য সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে সচেতন করতেই দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।

পৃথিবীর জনসংখ্যা বাড়ছে। বাড়তি জনসংখ্যার চাপ আর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি বয়ে আনছে। একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে বিভিন্ন প্রকার জীবের একত্রে সমাবেশই হলো জীববৈচিত্র্য। পৃথিবীতে জীবনের বিভিন্নতা ও পরিবর্তনশীলতাই জীববৈচিত্র্যের মূল বিষয়। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও মানুষের বেঁচে থাকার জন্য জীববৈচিত্র্য রক্ষা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

পৃথিবী নামক গ্রহ সৃষ্টির পর থেকেই শুরু হয়েছে প্রাণী ও উদ্ভিদের সম্পর্ক। পৃথিবীতে সৃষ্টির সবকিছুই পরস্পর নির্ভরশীল ও বাস্তুসংস্থানের অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু পৃথিবীব্যাপী দূষণ, তাপমাত্রা বৃদ্ধি, দুর্যোগ, প্রকৃতি-পরিবেশ বিনাশী কার্যকলাপ, যুদ্ধ, মানুষের অসচেতনতাসহ নানা কারণে উদ্ভিদ, প্রাণী, অণুজীবসহ সামগ্রিক জীববৈচিত্র্য আজ হুমকির সস্মুখীন।

‘ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফান্ডের (ডব্লিউডব্লিউএফের)’ এক গবেষণা বলছে, বিশ্বে গত ৪০ বছরে বন্য প্রাণী ৫৮ শতাংশ কমে গেছে। বছর প্রতি এ হ্রাসের হার ২ শতাংশ। তথ্য মতে, হ্রদ-নদী থেকে স্বাদু পানির প্রাণী সবচেয়ে বেশি হ্রাসের ঝুঁকিতে রয়েছে। প্রাণিজগতের ওপর জলবায়ুর প্রভাব অনেক আগেই শুরু হয়েছে।

জলবায়ু পরিবের্তনের কারণে সমুদ্রের গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি, বরফ ও হিমবাহ গলে যাওয়ার কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে। ফলে গাছপালা, প্রাণীর আবাসস্থল সর্বোপরি জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকি তৈরি হচ্ছে। উপকূলের গাছপালা ও প্রাণ-প্রতিবেশের ওপর প্রতিকূল প্রভাব পড়ছে।

তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে জলভাগের সামুদ্রিক জীব ও স্থলভাগের অনেক প্রাণী বিলীন হয়ে গেছে। অনেক প্রাণী আবার অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে। জলবায়ু পরিবর্তনে উত্তর ও দক্ষিণ মেরুর বরফ গলে যাচ্ছে। গ্রীনল্যান্ডের প্রাণীদের বছরে আগে প্রায় নয় মাস বরফের চাদর সুরক্ষা দিত।

কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, এখন বরফ পড়তে একদিকে যেমন দেরি হচ্ছে অন্যদিকে আবার বরফ তাড়াতাড়ি গলেও যাচ্ছে। ফলশ্রুতিতে তাদের শীতকালীন বাসস্থান ধ্বংস হয়ে যাওয়াসহ স্বাভাবিক বংশবৃদ্ধিতে সমস্যা হচ্ছে।

বাংলাদেশের উপকূলের মাটিতে লবণাক্ততা বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে ঘন ঘন লোনা পানির প্লাবন মাটিতে লবণাক্ততা বাড়িয়ে দিচ্ছে। লবণাক্ততার প্রভাবে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালীসহ দক্ষিণাঞ্চলের অন্যান্য জেলাগুলোতে চাষাবাদে সমস্যা, সুপেয় পানির সংকট ও জীববৈচিত্র্য টিকে থাকার ক্ষেত্রে নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছে।

জীববৈচিত্র্যের বড় একটি উপাদান পাখি। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে পাখিও রেহাই পাচ্ছে না। পরিবেশের বন্ধু বিভিন্ন প্রজাতির পাখি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে থাকে। ব্যাঙও ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ খেয়ে ফসলী উদ্ভিদকে রক্ষা করে।

কিন্তু জমিতে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহারের ফলে বিভিন্ন উদ্ভিদ ও প্রাণীর মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। ছোট দেশ হিসেবেও বাংলাদেশে অনেক বন্য প্রাণী ও প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে। বন্যপ্রাণী রক্ষা পাওয়া মানে বন, জলাভূমি ও নির্মল প্রকৃতি রক্ষা পাওয়া।

কিন্তু আবাসস্থল ধ্বংস হওয়া ও নির্বিচারে হত্যার শিকার হওয়ায় বন্য প্রাণীরা বিভিন্ন দেশ থেকে একে একে বিলুপ্ত হচ্ছে। জল ও স্থলভাগের প্রতিটি প্রাণী খাদ্যশৃঙ্খলের মাধ্যমে একে অপরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের নদ-নদী, হাওর-বাঁওর, খাল-বিল ও বঙ্গোপসাগরের উপকূল জীববৈচিত্র্যের আধার।

কিন্তু প্রাকৃতিক জলাধারগুলো দখল আর সমুদ্র দূষণের কারণে জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে। হাওর-বাঁওর ও বিলে পাখি শিকার করা হচ্ছে। একসময় ঢাকা শহরে প্রচুর বৃক্ষ, পাখি এবং পুকুর-জলাশয় ছিলো। বর্ষাকালে প্রচুর মাছ, ব্যাঙ ও অন্যান্য প্রাণী দেখা যেতো। কিন্তু এখন এসব অতীত! যদিও ঢাকা শহরের জলাশয়গুলো রক্ষা এবং দূষণমুক্ত করতে পারলে এখনো কিছু জীববৈচিত্র্য রক্ষা করা সম্ভব।

‘ডব্লিউডব্লিউএফের’ এক গবেষণায় বলা হয়েছে, যদি বিশ্বে তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি বেড়ে যায় তাহলে দক্ষিণ আমেরিকার সবচেয়ে বড় বন আমাজান ও আফ্রিকা, এশিয়া, উত্তর আমেরিকা এবং অস্ট্রেলিয়ায় প্রাকৃতিকভাবে সমৃদ্ধশালী বাস্তুসংস্থানের ওপর মারাত্মক বিপর্যয়ের প্রভাব পড়বে। এর ফলে স্তন্যপায়ী ও উভচর প্রাণী, সরীসৃপ এবং পাখি একবারে হারিয়ে যেতে পারে। তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি অতিক্রম করলে সামগ্রিক জীববৈচিত্র্যের ওপর মহাবিপর্যয় নেমে আসবে। উষ্ণ আবহাওয়া, অতিরিক্ত বৃষ্টি, দুর্যোগ ও দূষণ পৃথিবীর বড় বড় বনাঞ্চল যেমন আফ্রিকার সাভানা অঞ্চল, ব্রাজিলের সিরাডো-পান্তানাল অঞ্চল, ইউরোপের ইয়াংটজ বদ্বীপ ও উপকূল, মাদাগাস্কার ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের জীববৈচিত্র্যের ওপর ইতিমধ্যে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে।

লবণাক্ততার কারণে উপকূলে অবস্থিত পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের পরিবেশগত অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে। সম্প্রতি এক গবেষণার তথ্য মতে, সুন্দরবনের শিবসা, পশুর নদসহ অন্যান্য নদ-নদী ও খালে লবণাক্ততার পরিমাণ বাড়ছে। তথ্য মতে, সুন্দরবন এলাকায় প্রতিবছর লবণাক্ততা বাড়ছে প্রায় ২ পিপিটি বা পার্টস পার ট্রিলিয়ন হারে।

লবণাক্ততার ফলে বিরূপ প্রভাব পড়েছে মিঠা পানির মাছের ওপর। গবেষণায় বলা হয়েছে, মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে সুন্দরবনের প্রায় ২৭ প্রজাতির মাছ (শিং, কাতল, টাকি, পাবদা, শোল, মাগুর ইত্যাদি)। এই ২৭ প্রজাতির মাছ শূন্য থেকে পাঁচ পিপিটি পর্যন্ত লবণাক্ততা সহ্য করতে পারে। ইতোমধ্যে খুলনা ও বাগেরহাটের নদী-নালা-খাল-বিল থেকে মিঠা বা স্বাদু পানির অনেক মাছ হারিয়ে গেছে।

সুন্দরবন ও চারপাশের এলাকায় লবণাক্ততার পরিমাণ যতো বাড়বে বনের প্রতিবেশ ব্যবস্থার ওপর তার বিরূপ প্রভাব পড়বে। নদ-নদীগুলোর প্রবাহ কমে আসার ফলে নিম্নমুখিতার দিকে লবণাক্ততা উঠে আসছে। এ ছাড়া লবণপানি আটকে চিংড়ি ও কাঁকড়া চাষ করার ফলেও লবণাক্ততা বেড়ে যাচ্ছে।

পর্যটকের ভারে সুন্দরবনের প্রতিবেশ ব্যবস্থার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। আবার কারখানার দূষণে শুধু উদ্ভিদ-প্রাণীই ঝুঁকিতে নেই, বিভিন্ন প্রাণীর স্বাভাবিক খাদ্যচক্রও বিনষ্ট হচ্ছে। সুন্দরবনে নদী-খালগুলো নানা প্রজাতির মাছ ও জলজ প্রাণীর এক অনন্য ভাণ্ডার। কিন্তু বিভিন্নভাবে সুন্দরবনের এই নদী-খালগুলোকে বিষাক্ত করে তোলা হচ্ছে।

নদী-খালের মুখ বন্ধ করে বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে মাছ ধরা হচ্ছে! সুন্দরবনের অস্তিত্ব রক্ষার সঙ্গে নদী-খাল আর জীববৈচিত্র্যের ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু সুন্দরবন ও আশেপাশের পরিবেশের ওপর লবণাক্ততার প্রভাব এবং প্রকৃতি-প্রতিবেশবিনাশী বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের ফলে বনের জীববৈচিত্র্য আজ হুমকির সম্মুখীন।

সুন্দরবনে প্রায় ১৬৭ প্রজাতির বেশি উদ্ভিদ-প্রাণী রয়েছে। সুন্দরবন প্রাকৃতিক সম্পদের আধার ও জলবায়ু দুর্যোগে উপকূলীয় অঞ্চলের রক্ষাদেয়াল। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলসহ সমগ্র দেশের পরিবেশ-প্রতিবেশসহ উপকূলের লক্ষ-কোটি মানুষের জীবন-জীবিকা সুন্দরবনের সাথে জড়িত। সুন্দরবন অক্সিজেনেরও বিশাল আধার।

লবণাক্ততার কারণে সুন্দরবনে ডলফিনসহ অনেক জলজ প্রাণী টিকে থাকা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে! তথ্য মতে, প্রতিবছর প্রায় ১০ হাজারের বেশি হরিণ নিধন করা হয়। সুন্দরবনে বাঘ ও হরিণের সংখ্যা প্রতিবছর কমছে। আবাসস্থল ও খাদ্য সংকটসহ চোরা শিকারিদের কারণে বাঘের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। বাংলাদেশের জাতীয় মর্যাদায় অধিষ্ঠিত শৌর্য, বীর্য আর বীরত্বের প্রতীক বাঘ রক্ষা করতে না পারলে সুন্দরবন বাঁচানো যাবে না-এটা মোটামুটি নিশ্চিত।

মাটি ও আলো দূষণ জীববৈচিত্র্যের ওপর ব্যাপকভাবে প্রভাব বিস্তার করে থাকে। কেনোনা খাদ্য উৎপাদন, জীবনাচরণ ও বেঁচে থাকা কোনো না কোনোভাবে মাটির ওপরই নির্ভরশীল। মাটি দূষণ হলে তার প্রভাব জীববৈচিত্র্যের ওপর প্রভাব ফেলবে-এটাই স্বাভাবিক। ভারী ধাতুর (পারদ, সীসা, ক্যাডমিয়াম) বিষক্রিয়ার প্রভাব অণুজীবের বিনাশ করে।

বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে মৃত্তিকার অপসারণে মৃত্তিকা বিনষ্ট হওয়ার পাশাপাশি আবাসস্থলও ধ্বংস প্রাপ্ত হয়। তথ্য মতে, বাংলাদেশে প্রায় ২৫ ধরনেরও বেশি মাটি দেখা যায়। এক এলাকার মাটি ক্ষয় ও দূষণ অন্য এলাকার ওপর প্রভাব বিস্তার করে। বায়ুদূষণ ও পানি দূষণের থেকে ভয়াবহ হচ্ছে মাটিদূষণ। মাটির গুণাগুণ ঠিক না থাকলে মাটির জীববৈচিত্র্যও টিকিয়ে রাখা কঠিন।

কৃত্রিম আলোর অতিব্যবহার তথা এলইডি ও ফ্লুরোসেন্ট বাতির ব্যবহারে অনেক দেশ থেকেই রাত হারিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে উদ্ভিদ, প্রাণী ও মানুষের জীবনধারণে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। রাতের অন্ধকার কমে যাওয়ার ফলে গাছপালার ফুল ফোটার সময় এবং ঋতুর ধরনে একটা আমূল পরিবর্তন ঘটছে। নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে নিশাচর প্রাণীর জীবনযাপনের ওপর। মূলত কৃত্রিম আলোর দূষণে ফসলের পরাগায়ণ যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তেমনি রাতজাগা পোকামাকড়ের কার্যক্রমও কমে যাচ্ছে।

ইন্টারগভর্নমেন্টাল সায়েন্স পলিসি প্ল্যাটফরম অন বায়োডাইভার্সিটি অ্যান্ড ইকোসিস্টেম সার্ভিসেস (আইপিবিএস)-এর তথ্য বলছে, পৃথিবীতে দ্রুত ভূমির পরিবর্তন হচ্ছে। জলাভূমি হারিয়ে যাচ্ছে। বনভূমির প্রাকৃতিক ধরন পরিবর্তন হচ্ছে। আইইউসিএনের তথ্য মতে, এ পর্যন্ত পৃথিবীতে নথিভুক্ত মোট প্রজাতি প্রায় ২২ লাখ। এর মধ্যে বেশিরভাগই অমেরুদণ্ডী প্রাণী প্রজাতি। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি গবেষণা সংস্থার তথ্য মতে, জীববৈচিত্র্যের বিলুপ্তি অব্যাহত রয়েছে।

হাজার হাজার প্রজাতি পৃথিবী থেকে ইতোমধ্যে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এ ছাড়া জলবায়ুগত সমস্যার কারণে লক্ষেরও বেশি প্রজাতি বিলুপ্তির প্রহর গুনছে। জীববৈচিত্র্যের মাত্রাতিরিক্ত চাহিদা বা অতি আহরণ এর ধ্বংসের মূল কারণ। জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের অন্যান্য কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে জলবায়ু পরিবর্তন, জলাভূমি ধ্বংস, দূষণ, জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার, আবাসস্থল বিলুপ্ত, কীটনাশকের ব্যবহার, বন উজাড়, নগরায়ণ, দাবানল ইত্যাদি। প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট উভয় কারণে জীববৈচিত্র্যের বিলুপ্তি অব্যাহত রয়েছে বলে বিজ্ঞানীরা দাবি করছেন।

ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর করজারভেশন অব নেচার অ্যান্ড ন্যাচারাল রিসোর্সেস (আইইউসিএন)-এর এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, জীববৈচিত্র্য রক্ষায় চীন, যুক্তরাষ্ট্রসহ পৃথিবীর উন্নত দেশসমূহে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ব্যবহার হচ্ছে। ক্যামেরা ট্রাপিং, স্যাটেলাইট ও ড্রোন চিত্রের মাধ্যমে প্রজাতি শনাক্তকরণ, চোরা শিকার প্রতিরোধ, আবাসস্থল পর্যবেক্ষণ ও জীববৈচিত্র্যের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা নির্ণয় ইত্যাদি ক্ষেত্রে এআই এর ব্যবহার শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এআই এর ব্যবহার বিবেচনা করা যেতে পারে। নদীমাতৃক বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্যের স্বর্গরাজ্য। কিন্তু দুঃখের বিষয়, বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্য নিয়ে সঠিক তথ্য-উপাত্তের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। মেরুদণ্ডী, অমেরুদণ্ডী, উদ্ভিদ ও ক্ষুদ্র অণুজীব বিবেচনায় নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা গেলে তা জীববৈচিত্র্য রক্ষায় পরিকল্পনা গ্রহণে বাস্তবসম্মত ভূমিকা রাখবে।

লেখক: শিক্ষক

 

জনপ্রিয়