ব্রহ্মপুত্রের তীরে টিনের ছোট্ট এই মসজিদটি দেখতে সাদামাটা হলেও স্থানীয় হিজড়াদের জন্য তা খুশির সংবাদ। অন্যান্য মসজিদ থেকে প্রত্যাখ্যাত হওয়া তাদের জন্য দৈনন্দিন ঘটনা। সরকারের দান করা জমিতে ময়মনসিংহের এই মসজিদটি তৈরি হয় কয়েক ডজন হিজড়ার অর্থ এবং শ্রমে। নাম দেওয়া হয় দক্ষিণ চর কালীবাড়ি মসজিদ।
স্থানীয় একটি হিজড়া কল্যাণ সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা মুফতি আবদুর রহমান আজাদ জানান, বাংলাদেশে এমন মসজিদ এই প্রথম। অন্য একটি শহরেও এমন একটি মসজিদ তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, তবে স্থানীয়দের প্রতিবাদে তা ভেস্তে যায়।
দক্ষিণ চর কালীবাড়ি মসজিদের ইমাম আবদুল মোতালেব বলেন, হিজড়াদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ তার ধর্মে শেখায় না। আর দশজনের মতো তারাও আল্লাহরই তৈরি। সবারই প্রার্থনা করার অধিকার আছে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে হিজড়া গোষ্ঠির উন্নতি ঘটেছে কিছু ক্ষেত্রে। ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে হিজড়া পরিচিতিকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। কেউ কেউ রাজনীতি করেন। ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে একটি ছোট শহরের মেয়র হিসেবে একজন নির্বাচিত হন। তবে সমাজে এখনো তাদেরকে ছোট করেই দেখা হয়। এছাড়া দারিদ্র্য এবং সহিংসতার শিকার বেশি হন হিজড়ারা।
দক্ষিণ চর কালীবাড়ি মসজিদ ইতোমধ্যেই আশেপাশের মানুষের মাঝে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির জন্ম দিচ্ছে। ওই এলাকার বাসিন্দা তোফাজ্জল হোসেন জানান, তিনি পর পর দুই সপ্তাহ এই মসজিদে জুম্মার নামাজ পড়েছেন। আগে হিজড়াদের ব্যাপারে অনেক ভুল ধারণা ছিলো তার। একই এলাকায় বসবাস এবং একই মসজিদে নামাজ আদায় করার পর থেকে তার এসব ভুল ধারণা ভাঙ্গা শুরু হয়েছে।