
মঙ্গল শোভাযাত্রায় সাঈদের ভাস্কর্যে আপত্তি পরিবারের
১ বৈশাখে নববর্ষের মঙ্গল শোভাযাত্রায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের ২০ ফুট ভাস্কর্য বহনের আপত্তি জানিয়েছেন তার পরিবারের সদস্যরা।
মঙ্গল শোভাযাত্রায় আবু সাঈদের ভাস্কর্য রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ খবর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হলে তার পরিবারের সদস্যরা তাদের আপত্তির বিষয়টি জানান। তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) সন্ধ্যায় সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে এ আপত্তির কথা জানান, আবু সাঈদের মেজো ভাই আবু হোসেন।
তিনি বলেন, আমরা মঙ্গল শোভাযাত্রায় আবু সাঈদের ভাস্কর্য চাই না। আমরা ভাস্কর্যের পক্ষে নই। ইতোমধ্যে, ওর বন্ধু-বান্ধবরা এসব নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করে প্রতিবাদ করেছেন। ফেসবুকে দেখে আমিও তাদের প্রতিবাদে সম্মতি জানিয়েছি যে, আমরা ভাস্কর্য চাই না।’
আবু হোসেন আরো বলেন, আমি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে ফোন করেছিলাম। উপদেষ্টার পিএসের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বলেছেন, তারা এটা বাস্তবায়ন করছেন না। এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে আয়োজন করেছে। এরপর তিনি বলেন, আমার সেখানে কোনো যোগাযোগের এক্সেস নেই। তারপরেও আমি তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি, যেন তারা এটা না করেন!
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আজাহারুল ইসলাম শেখ সংবাদমাধ্যমকে জানান, আবু সাঈদের ২০ ফুট দীর্ঘ একটি ভাস্কর্য মঙ্গল শোভাযাত্রায় বহনের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রাথমিক কাজ হিসেবে একট কমিটি গঠনও করা হয়েছে। কমিটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে, কীভাবে এটি বাস্তবায়ন করা যায়।
আবু সাঈদের পরিবারের সদস্যদের সম্মতি আছে কি না জানতে চাইলে অধ্যাপক আজাহারুল ইসলাম শেখ বলেন, কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। তিনি বলেন, নববর্ষের শোভাযাত্রায় এই আয়োজন জুলাই আন্দোলনের চেতনা তুলে ধরার জন্য করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দের ৯ আগস্ট এক বিবৃতিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (রেবোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদের ‘ভাস্কর্য’ না বানানোর অনুরোধ জানান তার বাবা মকবুল হোসেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট ১৯৮৯ খ্রিষ্টাব্দ থেকে নববর্ষ ১ বৈশাখ উদযাপন উপলক্ষে শোভাযাত্রা শুরু করে। আগে এর নাম ছিল- ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’। ৯০’-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের পটভূমিতে অমঙ্গলকে দূর করে মঙ্গলের আহ্বান ধারণ করে এর নাম করা হয়- ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’।২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ নভেম্বর জাতিসংঘের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও বিজ্ঞানবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো মঙ্গল শোভাযাত্রাকে ‘বিশ্বের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের’ তালিকাভুক্ত করে।