এখনো ঝুঁকিমুক্ত হয়নি জলদস্যুর কবলে পড়া বাংলাদেশি জাহাজ ‘এমভি আবদুল্লাহ’। গত ১৩ এপ্রিল বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত ৩টায় জলদস্যু মুক্ত হয় জাহাজটি। এরপর আরব আমিরাতের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন নাবিকরা। এ প্রতিবেদন লেখার সময়ে জাহাজটি সোমালিয়ার উপকূল থেকে ৩৭০ নটিক্যাল মাইল দূরে ছিলো। সেটি ‘অতি ঝুঁকিপূর্ণ’ এলাকা হিসেবে পরিচিত। আরো ১২১ নটিক্যাল মাইল চলার পর ঝুঁকিমুক্ত এলাকা পাবে এমভি আবদুল্লাহ।
তখন দুশ্চিন্তাও কিছুটা কমবে নাবিকদের। এখনো ইউরোপীয় ইউনিয়নের দুটি যুদ্ধজাহাজ পাহারা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে এমভি আবদুল্লাহকে। জাহাজ মালিকের কাছে নাবিকদের পাঠানো প্রতিদিনের আপডেট থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
কেএসআরএম গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান রাহাত জানান, এবার যাত্রা শুরুর আগে নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে এমভি আবদুল্লাহর। জাহাজের চারপাশে দেয়া হয়েছে কাঁটাতারের বেষ্টনী। অন্য কোনো জলদস্যু গ্রুপ যাতে জাহাজটি ফের আক্রমণ করতে না পারে সেজন্য এমন নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করা হয়েছে জাহাজটিতে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে নিরাপত্তা কুঠুরি সিটাডেলও।
বিষয়টি স্বীকার করে কেএসআরএম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরুল করিম বলেন, সোমালিয়ার যে উপকূল থেকে নাবিকরা আরব আমিরাতের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছিলো সেটি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ছিলো। এজন্য আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে আমরা নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছি। কাঁটাতারের বেষ্টনী যুক্ত করেছি।
তিনি আরো বলেন, কাঁটাতারের এই ব্যবস্থা জাহাজেই ছিলো। আমাদের সব জাহাজে এমন প্রস্তুতি থাকে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা অতিক্রমের সময় আমরা সেটা ব্যবহার করি।
তাহলে জলদস্যু আক্রান্ত হওয়ার সময় ব্যবহার করেননি কেনো এমন প্রশ্নের জবাবে কেএসআরএম গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান রাহাত বলেন, আমাদের জাহাজ তখন হাইরিস্ক এরিয়ার বাইরে ছি্লো। সোমালিয়ার উপকূল থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইল রিস্কি এলাকা। তখন আমরা ৬০০ নটিক্যাল মাইল দূরে ছিলাম। তাই আর্ম গার্ড নিইনি আমরা। গত রোববার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনেও অভিন্ন কথা বলেন তিনি।
কেএসআরএম গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে জাহাজটি দুবাইয়ের উদ্দেশে রওনা হয়েছে। আশা করছি ২২ এপ্রিল সেখানে নোঙর করবে এটি।
গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগর থেকে ২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ জিম্মি করেছিলো সোমালিয়ার জলদস্যুরা। মুক্তিপণ নিয়ে জাহাজটি ছেড়ে দেয় জলদস্যুরা।