ঢাকা রোববার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫ , ১৩ বৈশাখ ১৪৩২ আর্কাইভস ই পেপার

bkash
bkash
udvash
udvash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
bkash
bkash
udvash
udvash

মাটির মূল্যায়ন জরুরি

মতামত

শুভাশিস ব্যানার্জি শুভ, আমাদের বার্তা

প্রকাশিত: ০৮:৩০, ২১ মার্চ ২০২৫

সর্বশেষ

মাটির মূল্যায়ন জরুরি

প্রতিটি প্রাণী ও জীবের খাদ্যের মূল উৎস হলো স্বাস্থ্যকর মাটি। এটা একটি জীবন্ত প্রাকৃতিক যৌগ, যা খুব ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হয়। জীবতত্ত্ব অনুসারে মাটির টিকে থাকার জন্য প্রয়োজন হয় অক্সিজেন এবং পানি। মাটি ছোট জীব থেকে শুরু করে মানবগোষ্ঠী পর্যন্ত সবাইকে প্রয়োজনীয় নানান উপাদানের জোগান দিয়ে থাকে।

এটা উদ্ভিদকে পুষ্টি সরবরাহ করে, যা আমাদের খাওয়ায়, পানিকে ফিল্টার করে আমাদের পানের যোগ্য করে দেয়, বন্যা থেকে রক্ষা করে। মাটি জীবের বাসস্থান হিসেবে কাজ করে এবং আমাদের অ্যান্টিবায়োটিক সরবরাহ করে। মূল কথা হচ্ছে, মানুষের জীবন, জীবিকা ও খাদ্য নিরাপত্তা, বসবাস, যাতায়াত, চাষাবাদ, ফল-ফসল উৎপাদন- সবকিছু চলে মাটিকে ঘিরেই।

জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সব ক্ষেত্রে অপরিহার্য হচ্ছে মাটি। অপরিকল্পিত ব্যবহারে মাটি হারাচ্ছে তার স্বক্রিয়তা, স্বমহিমা এবং গুণাগুণ। পরিণামে শুধু মাটি ক্ষতিগ্রস্তই হচ্ছে না, প্রকারান্তরে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মানুষও। কারণ মাটিকে ঘিরেই মানুষের কর্মকাণ্ড আবর্তিত। দিন দিন মানুষ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে শিল্পায়ন, নগরায়ণ, বাড়িঘর নির্মাণ, অবকাঠামোসহ রাস্তাঘাট তৈরিতে নানা কারণে চাষের জমি কমছে। আবার এসব সমস্যার সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা।

মাটি হঠাৎ করে তৈরি হয়নি। লক্ষ-কোটি বছর ধরে বিভিন্ন শিলা ও পাথর জলস্রোতে ক্ষয়ে ক্ষয়ে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র মাটিকণার সৃষ্টি হয়েছে। পৃথিবীর কোনো স্থানের মাটিই শুধু মাটিকণা দিয়ে গড়া না। মাটিতে রয়েছে তার আয়তনের প্রায় অর্ধেক মাটিকণা, সিকি ভাগ পানি ও সিকি ভাগ বায়ু। অবস্থা ও পরিবেশভেদে এর আনুপাতিক পরিমাণ কম-বেশি হতে পারে।

তবে মাটির গঠনে এ তিনটি উপাদান অনিবার্যভাবে সত্য। পানি ও বায়ু মাটিকণার ফাঁকে ফাঁকে বহু রকমের অণুজীব বা মাইক্রোঅর্গানিজমকে বাঁচিয়ে রাখার পরিবেশ তৈরি করে দিয়েছে, যাদের আমরা চোখেও দেখি না। কিন্তু তারা আমাদের অলক্ষ্যে মাটিতে বাস করে আমাদের যে কত বড় উপকার করে চলেছে তা আমরা কল্পনাও করতে পারি না। সেখানে ব্যাকটেরিয়া আছে বলে মাটিতে জৈব জিনিসের পচন হচ্ছে, জৈব জিনিস পচে মাটিতে গাছের খাদ্য তৈরি করছে, পৃথিবীকে বর্জের দূষণ থেকে মুক্ত রাখছে। ছত্রাকসূত্ররা সেসব খাদ্যপুষ্টি এক গাছের শিকড় থেকে আর এক গাছের শিকড়ে পৌঁছে দিচ্ছে। শিমগোত্রীয় গাছের শিকড় বাতাসের নাইট্রোজেনকে মাটিতে সঞ্চয় করে উর্বরতা বাড়াচ্ছে, বেশি নাইট্রোজেনের সঞ্চয়ন বিভিন্ন উদ্ভিদকে দিচ্ছে প্রাকৃতিক বৃদ্ধি ও শক্তি। চলছে জলস্রোতের প্রবাহ, পানির সঙ্গে পুষ্টির চলাচল। এ রকম নানান রকমের জীবনের খেলা চলছে মাটির ভেতরে। যার ওপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়ে রয়েছে আমাদের জীবনের মূলসূত্র, জীবনের জিয়নকাঠি, গাছপালা, ঘরবাড়ি—সবকিছু।

লেখক:

 

জনপ্রিয়