
বর্তমানে এমন একটি সময়ে আমরা আছি, যখন শিক্ষাব্যবস্থায় অভূত কিছু ধারণা উদঘাটিত হয়েছে। নিত্যনতুন কলাকৌশল সৃষ্টি হচ্ছে এবং অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে পাঠদান কার্যক্রম চলছে। এসব কিছু সম্ভব হচ্ছে একমাত্র তথ্যপ্রযুক্তির সম্প্রসারণের কারণে। এই তথ্যপ্রযুক্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার হলো ইন্টারনেট।
ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রত্যন্ত গ্রামেও অত্যাধুনিক শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা সম্ভব হচ্ছে। গতানুগতিক শিক্ষা বিস্তৃতি হ্রাস পাচ্ছে এবং শিক্ষা হচ্ছে যোগ্যতাভিত্তিক। এখনকার পাঠদান বা শ্রেণি ব্যবস্হাপনা শিক্ষকের গতানুগতিক পাঠদানের ওপর নির্ভরশীল নয়।
শ্রেণিকক্ষের জায়গা দখল করে নিয়েছে ডিজিটাল ও ভার্চ্যুয়াল ক্লাসরুম এবং পাঠ্যপুস্তকের পরিবর্তে আসছে পিডিএফ ফাইল, ডিজিটাল বই, রোবটিক্স পাঠদান আর মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে উপস্থাপনা। এই মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা পুরো বিশ্বকে দেখছে আর অতি সহজে সমৃদ্ধ জ্ঞান অর্জন করেছে।
এই ক্লাসগুলোতে শিক্ষার্থীরা বাস্তব অবলোকনে আধুনিক চিন্তা চেতনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকে বিনোদনমূলক ও সহজ সাবলীলভাবে শিক্ষা গ্রহণ করছে। সনাতন চক, ডাস্টার, চক বোর্ডের মাধ্যমে অনেক তত্বগত ধারণা যথাযথ ভাবে শিক্ষা দেয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না কিন্তু ডিজিটাল কনটেন্ট ব্যবহার করে এক বা একাধিক স্হির বা চলমান চিত্রের সাহায্যে শিক্ষার্থীদের পরিপূর্ণ বা আনন্দদায়ক শিক্ষা সহজেই দেয়া যাচ্ছে। বর্তমানে ভার্চ্যুয়াল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে, যা ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।
ভার্চ্যুয়াল প্লাটফর্মে অনুষ্ঠিত শিক্ষা কার্যক্রমে শিক্ষার্থীরা দেশের বিভিন্ন স্হান থেকে একযোগে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারছে, এর ফলে গ্রামে ও শহরের শিক্ষা ব্যবস্হার আলাদা পার্থক্য থাকছে না।
এই ধরনের ক্লাসগুলোতে একটি বিশেষ সুবিধা হলো কোনো কারণে শিক্ষার্থী কোনো ক্লাসে যথাসময়ে উপস্থিত হতে না পারলেও পরে শিক্ষার্থীর সুবিধাজনক সময়ে এই ক্লাসগুলো দেখতে পারে।
যার ফলে শিক্ষার্থী পিছিয়ে পরার সুযোগ থাকে না। ডিজিটালাইজেশনের ফলে শিক্ষাব্যবস্হার পরিবর্তন হচ্ছে এবং মিটছে শিক্ষার্থীর জ্ঞান পিপাসা। বর্তমানে বিভিন্ন স্কুলে তৈরি করা হচ্ছে ভার্চ্যুয়াল শ্রেণিকক্ষ যা শিক্ষার্থীদের জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।
এক কথায় বলতে পারি তথ্য প্রযুক্তি হলো বর্তমানে তথ্যের উৎপত্তি, সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াকরণ, সঞ্চালন ও বিচ্চুরণে ব্যবহৃত পদ্ধতি যার মাধ্যমে একটি দেশ ও জাতি খুব সহজেই গতানুগতিক চিন্তা ধারা থেকে বের হয়ে বিশ্ব সভ্যতার সঙ্গে হাতে হাত রেখে এগিয়ে যেতে পারবে। পরিশেষে এই ধারাবাহিকতা ও প্রযুক্তি নির্ভর পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করে প্রযুক্তি সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত রেখে আমাদের শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তি সমৃদ্ধ বিশ্ব নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলবো।
লেখক: শিক্ষক, বামৈ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়