
পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে নেত্রকোণা জেলার কলমাকান্দা ও দুর্গাপুর উপজেলা সীমান্ত এখন চোরাচালানের স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠেছে। এই সীমান্ত পথে প্রতিদিন অন্তত কয়েক লাখ টাকার ভারতীয় চোরাইপণ্য ঢুকছে। জেলার কলমাকান্দা ও দুর্গাপুর উপজেলায় অন্তত কয়েকটি চোরাচালান রোডে প্রতিদিন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়োজিত সোর্সের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায় হচ্ছে। এক কথায় কলমাকান্দা ও দুর্গাপুর সীমান্তের চোরাচালান রাজ্যে এক অদৃশ্য কারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিরব। ফলে দিন দিন বেড়েই চলেছে ওই দুই উপজেলার সীমান্তে নারী চোরাচালানকারীর সংখ্যা। এ থেকে শিশুরাওবাদ পড়ছে না।
জানা যায়, কলমাকান্দা ও দুর্গাপুর উপজেলায় প্রত্যেকটি সীমান্ত এলাকায় রয়েছে বিজিবি ক্যাম্প। তবুও কলমাকান্দা ও দুর্গাপুর উপজেলার সীমান্ত এলাকাজুড়ে প্রতিদিনই লাখ লাখ টাকার ভারতীয় পণ্য বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। অভিযোগ রয়েছে, এসব পণ্য প্রবেশে আইন শৃঙ্খলা-বাহিনীর নির্ধারিত সোর্সম্যান বাহিনীকে নির্দিষ্ট হারে চাঁদা দিতে হয়। মূলত কলমাকান্দা ও দুর্গাপুর উপজেলার মধ্যে চেরাচালানের অন্যতম নিরাপদ ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে- কলমাকান্দা থেকে পাঁচগাঁও রোড, লেংগুরা ইউনিয়নের ফুলবাড়ী সীমান্তে কালাপানি রোড, খারনৈ হয়ে বড়দল রোড ও দুর্গাপুর থেকে বিজয়পুর রোড এবং দুর্গাপুর হয়ে পূর্বধলা দিয়ে শ্যামগঞ্জ রোড। অন্যান্য এলাকার তুলনায় এই দুই উপজেলায় সুযোগ-সুবিধা ভাল।
নির্ধারিত টাকা সোর্সদের পরিশোধ করার পর এসব এলাকায় ২/৩ মিনিটের মধ্যে অনেক গাড়ি বর্ডারের জিরো পয়েন্ট এলাকায় বিনা বাঁধায় ঢুকতে পারে। কয়েক মিনিটের মধ্যে সীমান্ত দিয়ে, সীমান্ত ফাঁড়ির আশাপাশের অর্ধশাতাধিক এলাকা দিয়ে অনায়সে আসছে চোরাই পণ্য। এই দুই উপজেলার রোডগুলো দিয়ে ভারতীয় মোটরসাইকেল, মোবাইল হ্যান্ডসেট, শাড়ি, শত শত গরু, মহিষ, কসমেটিকস, হরলিক্স, ইয়াবা, ফেন্সিডিল, বিভিন্ন ব্যান্ডের মদ, আমদানী নিষিদ্ধ ভারতীয় বিড়ি, বিভিন্ন ব্যান্ডের সিগারেট, সুপারি আর বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাচার হচ্ছে কম্বল, জ্যাকেট, মটরশুটি, মটর ডাল।
এদিকে সীমান্তে বসবাসরত এলাকাবাসীরা জানান, সীমান্ত এলাকায় চোরাকারবারীরা ত্রাসের রামরাজত্ব কায়েম করছে। তাদের উপরসরকারি সংস্থার কোন নজর নেই। চোরাচালান চক্রের গডফাদারদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি বলে কলমাকান্দা ও দুর্গাপুর উপজেলার সচেতন মহল মনে করছেন।