সমাজ সেবক, জমিদার ও রাজনৈতিক নেতা নওয়াব আলী চৌধুরীর আজ মৃত্যুবার্ষিকী।
নওয়াব আলী চৌধুরী ১৮৬৩ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর মাতামহ ও নাটোরের জমিদার মুহম্মদ আলী খান চৌধুরীর বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা জনাব আলী চৌধুরী ছিলেন টাঙ্গাইল জেলার ধনবাড়ীর জমিদার। তাঁর মাতার নাম রাবেয়া খাতুন চৌধুরী।
বাঙালি মুসলমানদের মধ্যে তিনিই সর্বপ্রথম মন্ত্রী পদে আসীন হন। মন্ত্রী হিসেবে তিনি কৃষি, শিল্প, গণপূর্ত ও আবগারি বিভাগের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। তিনি পুনরায় ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দে দ্বিতীয় দফায় কাউন্সিল সদস্য নির্বাচিত হন এবং ১৯২৫ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ মাসে মন্ত্রিপদে নিয়োগ লাভ করেন। কিন্তু তাঁর মন্ত্রিত্ব স্বল্পকাল স্থায়ী হয়েছিলো। একই বছরে তিনি গভর্নরের এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের সদস্য মনোনীত হন। এ পদে তিনি আমৃত্যু বহাল ছিলেন। এসময় তিনি বঙ্গীয় আইন পরিষদ এর ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
নওয়াব আলী চৌধুরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন। লর্ড হার্ডিঞ্জ কর্তৃক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ঘোষণার সময় থেকে ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দের ৩ মার্চ ইম্পেরিয়াল লেজিসলেটিভ কাউন্সিলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আইন পাস হওয়া পর্যন্ত দীর্ঘ ৯ বছর ধরে নওয়াব আলী চৌধুরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কাজ ত্বরান্বিত করার জন্য সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করেছিলেন।
১৯০৬ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা কলেজের মুসলমান ছাত্রদের আবাসনের উদ্দেশ্যে একটি মুসলিম হল প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি ৩৫ হাজার টাকা দান করেন। তাঁর উদ্যোগ ও প্রচেষ্টায় ঢাকা, কলকাতা ও ময়মনসিংহ শহরের বিভিন্ন কলেজের ছাত্রদের জন্য কয়েকটি হোস্টেল প্রতিষ্ঠিত হয়।
ব্রিটিশ সরকার নওয়াব আলী চৌধুরীকে ১৯০৬ খ্রিষ্টাব্দে ‘খান বাহাদুর’, ১৯১১ খ্রিষ্টাব্দে ‘নওয়াব’, ১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দে ‘সি.আই.ই’ এবং ১৯২৪ খ্রিষ্টাব্দে ‘নওয়াব বাহাদুর’ উপাধি প্রদান করে।
সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে দার্জিলিং শহরে নিজ বাসভবনে মৃত্যুবরণ করেন।